বিচার চাই, ‘তিলোত্তমার’। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় কার্যত উত্তাল গোটা দেশ। সুবিচারের দাবিতে রাত জেগেছেন সমাজের সব অংশের মানুষ। কিন্তু কেন তাঁকে এত নৃশংসভাবে খুন হতে হল? উঠছে প্রশ্ন।
বিচার চাই, ‘তিলোত্তমার’। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে (RG Kar Medical College & Hospital) তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় কার্যত উত্তাল গোটা দেশ। সুবিচারের দাবিতে রাত জেগেছেন সমাজের সব অংশের মানুষ। কিন্তু কেন তাঁকে এত নৃশংসভাবে খুন হতে হল? উঠছে প্রশ্ন।
তাহলে কি তিনি জেনে ফেলেছিলেন যে, জাল ওষুধ হাসপাতালে ঢুকছে এবং দিনের পর দিন নির্দ্বিধায় তা ব্যবহার করা হচ্ছে? মেডিক্যাল বর্জ্য থেকে সিরিঞ্জ, ব্যবহার করা স্যালাইনের বোতল এবং রক্তের পাউচ সহ নানান জিনিস বিক্রির কালোবাজারি কি তিনি জানতে পেরেছিলেন? অর্থাৎ, অসাধু চক্রের জাল ছিঁড়তে পারতেন সেই তরুণী চিকিৎসক?
না কি হাসপাতালের হোস্টেলে যৌনচক্রের খোঁজ পেয়ে গেছিলেন তিনি? ঠিক কোন কারণের জন্য আর জি কর (RG Kar) মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে খুন হলেন তিনি? এইসব প্রশ্নই এখন তুলতে শুরু করেছেন ঐ হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই।
এই প্রসঙ্গে উঠে আসছে সৌমিত্র বিশ্বাস নামে এক পড়ুয়া চিকিৎসকের নাম। সে অনেক বছর আগের কথা। আর জি কর হাসপাতালের হোস্টেল থেকে চিকিৎসক পড়ুয়া সৌমিত্রর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল ২০০১ সালের ২৫ অগাস্ট। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, তাঁর সেই ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখে আত্মহত্যা ধরে নিয়েই তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
কিন্তু সৌমিত্রর পরিবার কিন্তু খুনের অভিযোগই দায়ের করেছিল। এরপর কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) সেই কেসে সিআইডি (CID) তদন্তের নির্দেশ দেয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল যে, এই মামলায় বেশ কয়েকটি দিক খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। যদিও চিকিৎসকদের দাবি ছিল, মূল বিষয়টি ছিল হাসপাতালের মধ্যে যৌনচক্র।
আরও পড়ুনঃ
আর জি কর তদন্তে তৎপর সিবিআই, শুক্রবার সিজিও কমপ্লেক্সে ফের তলব পড়ুয়া চিকিৎসকদের
এক চিকিৎসক দাবি করেছেন, “মেডিক্যাল কলেজে যে সমস্ত মেয়েরা পড়তে আসত, তাদের মুখের ছবি কেটে নিয়ে বসানো হত ভিডিওর যৌনকর্মীর মুখে। এমনকি, সৌমিত্রের এক বান্ধবীর সঙ্গেও নাকি এমন ঘটনা ঘটেছিল। সৌমিত্র সেই ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাঁকে অনেকরকম ভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তবে শেষপর্যন্ত সৌমিত্র আত্মহত্যা করেছিলেন? নাকি তাঁকে খুন করা হয়েছিল, তা আজও স্পষ্ট নয়।”
আন্দোলনকারী এক চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন, “সৌমিত্রর মতো এই তরুণী চিকিৎসককেও হয়ত ভয় দেখানো হয়েছিল। স্বাস্থ্যভবনে অভিযোগও জানিয়েছিল ও। কিন্তু কাজ না হওয়ায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় সব ফাঁস করে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করছিল।”
সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি আর জি করেই মেডিক্যাল বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে একটি টেন্ডার ডাকা হয়। সেই টেন্ডার পান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে এক অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ কেউ। তবে সেই টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী, ব্যবহার হওয়া সিরিঞ্জ, রক্তের পাউচ কিংবা অল্প কাজে লাগা কোনও সামগ্রী যেখানে জমা হওয়ার কথা, সেখানে বেশিরভাগটাই যাচ্ছে না বলে অভিযোগ সামনে আসে।
তাহলে কি এইসব দুর্নীতির কথা ঐ তরুণী চিকিৎসক জেনে গেছিলেন? সিবিআই তদন্তে (Investigation) কি উঠে আসবে এই বিষয়গুলি? বিচার পাবেন ‘তিলোত্তমা’? উত্তর দেবে সময়।
আরও পড়ুনঃ
'আমরা কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি না' সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন পুলিশ কমিশনার
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।