রাজ্যপাল আচার্য হিসেবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ব়্যাগিং বিরোধী কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। যাদবপুরের কয়েকজন অধ্যাপকের সঙ্গে কথাও বলেন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজভবনে জরুরি তলব করা হয়েছে। বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তরফে প্রতিনিধি দলকে রাজভবনে আসতে বলা হয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যু বনিয়ে নবান্ন আর রাজভবনের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। তারপরই রাজভবনের এই পদক্ষেপ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেও মনে করা হচ্ছে।
বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যুর তদন্তে ক্রমশই সামনে আসছে ব়্যাগিংএর তত্ত্ব। যা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ছে রাজ্য রাজনীতিতে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও উপাচার্য বা ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য না থাকায় রাজ্যপালের দিকেই অভিযোগের তীর উঠছে। জাতীয় মানবিধিকার কমিশন যেমন ছাত্রমৃত্যু নিয়ে রাজ্য সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছে, তেমনই রাজ্য শিশু সুরক্ষা দফতরও রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। এই অবস্থায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাজভবনে বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
গত মার্চ মাসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সুরঞ্জন দাস। তারপর অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে রাজ্যপাল নিয়োগ করেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অমিতাভ দত্তকে। কিন্তু গত ৪ অগাস্ট তিনিও ইস্তফা দেন। এখনও পর্যন্ত উপাচার্য বা অস্থায়ী উপাচার্যের পদ ফাঁকা রয়েছে, কোনও নিয়োগ হয়নি। রাজ্য় সরকার আর রাজভবনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বা অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়েও টানাপোড়েন চলছে।
রাজ্যপাল আচার্য হিসেবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ব়্যাগিং বিরোধী কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। যাদবপুরের কয়েকজন অধ্যাপকের সঙ্গে কথাও বলেন। তবে শুধু যাদবপুর নয়, রাজ্যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েই ব়্য়াগিং বিরোধী কমিটি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। কিন্তু তার আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে তলব করা হয়েছে। সূত্রের খবর স্বপ্নদীপের মৃত্যুর কারণ ও বিশ্ববিদ্যালটের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা স্বপ্নদীপ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল। বুধবার রাতে মেন হোস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে যায়। দ্রুত উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই তাঁকে কেপিসি হাসপাতালে নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় স্বপ্নদীপের। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি রাত ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ হোস্টেলের নিচে ছিলেন। ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ শুনতে পান। ছুটে যান ঘটনাস্থলে। তখনই দেখতে পান স্বপ্নদীপ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দ্রুত সেখানে প্রচুর ছাত্র উপস্থিত হয়। তারা সকলে মিলে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রকে উদ্ধার করে। নিয়ে যায় হাসপাতালে। দ্রুত চিকিৎসাও শুরু হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাঁকে।