মৃত পড়ুয়ার মামা অরূপ কুণ্ডুর অভিযোগ ভাগ্নের মৃত্যুর নেপথ্যে দায়ী 'র্যাগিং'। যাদবপুর থানায় এফআইআরও দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
'মা, আমি ভাল নেই', বুধবার রাতে শেষবাড় ফোনে এই মায়ের কাছে এই কথাই বলেছিলেন যাবদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডু। বলেছিলেন খুব ভয় করছে তাঁর। ব্যাস, এই শেষ কথা মায়ের সঙ্গে। মাকে শীঘ্রই আসতেও বলেছিলেন তিনি। বুধবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলের এ ব্লকের তিনতলা থেকে 'পড়ে গিয়ে' মৃত্যু হয় স্বপ্নদীপের। মৃত পড়ুয়ার মামা অরূপ কুণ্ডুর অভিযোগ ভাগ্নের মৃত্যুর নেপথ্যে দায়ী 'র্যাগিং'। যাদবপুর থানায় এফআইআরও দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ও। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে যাদবপুর থানায় অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তৈরি হয়েছে তদন্তকারী কমিটিও।
তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্র মৃত্যুর ঘটনা আদৌ আত্মহত্যা কিনা সেবিষয় সংশয় কাটছে না। স্বপ্নদীপের মামার অভিযোগ এই ঘটনা মোটেও আত্মহত্যা নয়। তিনি জানিয়েছেন গতকাল রাতেও মাকে ফোনে স্বপ্নদীপ বলেছিলেন,'মা, আমি ভালো নেই। খুব ভয় করছে।' কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করায় ১৮ বছরের পড়ুয়া জানিয়েছিলেন,'তুমি তাড়াতাড়ি এসো। তোমার সঙ্গে অনেক কথা রয়েছে।' এরপর বারবার ফোন করলেও আর ফোন ধরেনি ছেলে। মাকে ঠিক কী বলতে চেয়েছিল স্বপ্নদীপ, তা জানা হয়নি। এরপরই মাঝরাতে স্বাপ্নদীপের অভিভাবকের কাছে ফোন আসে, জানানো হয় তিনি পড়ে গিয়েছেন।
নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা স্বপ্নদীপ। মাত্র দুই দিন আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল। বুধবার রাতে মেন হোস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে যায়। দ্রুত উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই তাঁকে কেপিসি হাসপাতালে নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় স্বপ্নদীপের। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি রাত ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ হোস্টেলের নিচে ছিলেন। ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ শুনতে পান। ছুটে যান ঘটনাস্থলে। তখনই দেখতে পান স্বপ্নদীপ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দ্রুত সেখানে প্রচুর ছাত্র উপস্থিত হয়। তারা সকলে মিলে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রকে উদ্ধার করে। নিয়ে যায় হাসপাতালে। দ্রুত চিকিৎসাও শুরু হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাঁকে।