
ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশন। অনশনে অসুস্থ জুনিয়র চিকিৎসক পুলস্ত্য আচার্য্য। এনআরএস হাসপাতালের পিজিটি পুলস্ত্য আচার্যকে তাঁর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলস্ত্য আচার্য অনশনে যাওয়া প্রথম জুনিয়র ডাক্তারদের একজন। তিনি ১৯৬ ঘন্টা উপবাস করছেন। পুলস্ত্য আচার্য, অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের প্রথম বর্ষের পিজিটি। এনআরএস-এর ডিরেক্টরের মতে, প্রস্রাবে কিটোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় পুলস্ত্য আচার্যের বমি বমি ভাব হয়েছিল। সেই সঙ্গে পেটে ব্যথা শুরু হয়, মাথা ঘুরতে থাকে। অবিলম্বে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গ্রিন করিডরে নিয়ে যাওয়া হয় এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, পুলস্ত্য আচার্যের জন্য বিশেষ সিসিইউ রাখা হয়েছে। নেফ্রোলজি, কার্ডিওলজি, মেডিসিন, চেস্ট মেডিসিন, এনআরএসের অ্যানেস্থেসিয়ার চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
কলকাতা মেডিকেল কলেজের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের পোস্ট-ডক্টরাল প্রশিক্ষণার্থী অনুষ্টুপ মুখার্জি শনিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। পেটে ব্যথা ও রক্তক্ষরণের কারণে শনিবার রাত ১১টার দিকে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কলকাতা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনুষ্টুপ বর্তমানে সিসিইউতে রয়েছেন। অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের প্রধানের নেতৃত্বে আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রক্তপাত বন্ধ হয়েছে এবং অনুষ্টুপের অবস্থা স্থিতিশীল।
উত্তরবঙ্গ মেডিকেলেও একই চিত্র। মনোরোগ বিভাগের স্নাতকোত্তর প্রশিক্ষণার্থী অলোক ভার্মা মঞ্চে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অলোকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত, স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। অলোককে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় অনশন চালিয়ে গেছেন। এ দিন ফেডারেশন অফ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, ফেমা, বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনের যৌথ প্ল্যাটফর্মের প্রতিনিধিরা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে গিয়েছিলেন দুজনকে দেখতে। একের পর এক সহযোদ্ধা অসুস্থ হয়ে পড়লেও ১০ দফা দাবিতে লড়াই চালিয়ে যেতে মরিয়া জুনিয়র চিকিৎসকরা।
বাবা তার অসুস্থ ছেলেকে দেখতে ডানকুনির বাড়ি থেকে এসেছেন। নির্যাতিতার মা বলেন, "আমরাও খুব ব্যাথিত কারণ ওরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমি আমার একটি মেয়েকে হারিয়েছি। আমি আর কাউকে হারাতে চাই না। আমি মুখ্যমন্ত্রী-কে বলব যে তারা খুব কষ্টে আছে। তাই তাড়াতাড়ি শুভবুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে এই সমস্যার সমাধান করুন।" হাসপাতালে অনুষ্টুপকে দেখতে আসেন স্বাস্থ্য শিক্ষা পরিচালক অনিরুধ নেওগি।