মঙ্গলবার রাত ১০টা পরে এসএসকেএম থেকে বের হন মুখ্যমন্ত্রী। হুইলচেয়ারে করেই হাসপাতাল থেকে বের হন তিনি। উঠে বসেন নিজের গাড়িতে। গাড়ি রওনা দেয় কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির উদ্দেশে।
পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে বেরিয়ে চপার দুর্ঘটনায় পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ হাঁটুর লিগামেন্টে চোট লাগে। একই সঙ্গে চোট রয়েছে তাঁর বাঁ দিকের হিপ জয়েন্টের লিগামেন্টে। এসএসকেএম হাসপাতালে দীর্ঘ শারীরিক পরীক্ষার পরই এই তথ্য দেন হাসপাতালের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রীকে চোটের কারণে হাসপাতালে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব তিনি ফিরিয়ে দেন। আপাতত তিনি বাড়িতে থাকবেন।
মঙ্গলবার রাত ১০টা পরে এসএসকেএম থেকে বের হন মুখ্যমন্ত্রী। হুইলচেয়ারে করেই হাসপাতাল থেকে বের হন তিনি। উঠে বসেন নিজের গাড়িতে। গাড়ি রওনা দেয় কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির উদ্দেশে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বেশ কয়েকদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুইল চেয়ারেই বসে কাটাতে হবে। কারণ পায়ের ওপর চাপ দেওয়া চলবে না কোনওভাবেই। MRI এবং অন্য পরীক্ষানিরীক্ষা হওয়ার পর দেখা যায়, চোট গুরুতরই। কিন্তু হাসপাতালে মমতা থাকতে চাইছেন না বলে খবর মিলেছিল।
জেনে রাখা ভালো মঙ্গলবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর চপার প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়ে। মাঝপথে আকাশ কালো করে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। পাইলট সঙ্গে সঙ্গে হেলিকপ্টারের মুখ ঘুরিয়ে যে দিকে আকাশ পরিষ্কার, সে দিকে উড়তে শুরু করেন। তলায় বৈকণ্ঠপুরের ঘন জঙ্গল থাকায় তিনি তখনই কপ্টার নামাতে পারেননি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেবকের এয়ারবেসটি দেখতে পান পাইলট। সেখানেই জরুরি অবতরণ করেন।
এদিকে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীরা আপাতভাবে সুস্থ রয়েছেন। কিন্তু পরে সূত্র মারফত জানা যায় চোট পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকেলে তাঁরা বাগডোগরা থেকে বিমানে কলকাতায় ফেরেন। কলকাতায় তাঁকে চিকিৎসা করানো হবে এসএসকেএম হাসপাতালে। সূত্রের খবর কোমরে ও পায়ে ভালোই চোট পেয়েছেন মমতা। এসএসকেএমে পৌঁছে যান রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম।
হাসপাতাল সূত্রের খবর ২০২১ সালের মত গুরুতর চোট না পেলেও হেলিকপ্টার বিপত্তিতিতে তিনি বাঁ দিকে ব্য়াপক চোট পেয়েছেন। এমআরআই, সিটিস্ক্যান, এক্সরে করা হয়েছে। তারপরই মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের পক্ষ থেকে ডিরেক্টর জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী বাড়ি থেকেই চিকিৎসা করাবেন। তবে এজাতীয় চোটের চিকিৎসার থেকে যত্নের বেশি প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এদিন কলকাতা বিমানবন্দর থেকে তাঁকে তড়িঘ়ড়ি এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালে ঢোকার সময় তিনি হুইল চেয়ার নেননি। কিন্তু তাঁর চোট গুরুতর বুঝে চিকিৎসকরা একপ্রকার জোর করেই তাঁকে হুইল চেয়ার দেন। মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালে যাওয়ার আগেই সেখানে উপস্থিত হয়েছিল রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন আপাতত সুস্থ রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা শেষ হলে বাড়ির পথ ধরেন মমতা।