বুধবার ভূকৈলাস রোড-সহ মোট ১৭টি জায়গায় তল্লাশি চালায় এনআইএ। চারটি বাড়ি থেকে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। গোয়েন্দাদের অনুমান এই ৩৫ লক্ষ টাকা হিংসার কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল।
মোমিনপুর একবালপুর হিংসার ঘটনায় ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ-র তল্লাশিতে উদ্ধার করা হল প্রায় ৩৪ লক্ষ টাকা। এছাড়াও তিন অভিযুক্তের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ধারালো অস্ত্র ও অন্যান্য আপত্তিকর ও অপরাধমূলক সামগ্রী। এদিন এনআইএ ১৭টি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানাচ্ছে যে সন্দেহভাজনদের বাড়ি এবং অফিস চত্বরে অভিযান চলেছে। ইকবালপুর এবং মোমিনপুরে সংঘর্ষের সময় ভাঙচুর এবং সম্পত্তির ক্ষতির অভিযোগের ভিত্তিতে NIA গত বছরের অক্টোবরে একটি মামলা নথিভুক্ত করেছিল। এরপর মোমিনপুরে হিন্দু-বিরোধী হিংসার তদন্ত শুরু করে এনআইএ। এর আগে, ১০ অক্টোবর কলকাতা পুলিশ এই মামলায় প্রথম FIR নথিভুক্ত করেছিল।
বুধবার ভূকৈলাস রোড-সহ মোট ১৭টি জায়গায় তল্লাশি চালায় এনআইএ। চারটি বাড়ি থেকে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। গোয়েন্দাদের অনুমান এই ৩৫ লক্ষ টাকা হিংসার কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। তাই কোথা থেকে এই টাকা এসেছে, কোন পথ থেকে টাকা আনা হয়েছে তার তদন্ত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছর ২০২২ সালের ৯ অক্টোবর লক্ষ্মী পুজোর দিন কলকাতার ইকবালপুর ও মোমিনপুরে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক হাতাহাতি হয়। সেই সঙ্গে অগ্নিসংযোগও শুরু করে দুষ্কৃতীরা যার জেরে বহু মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। এনআইএ সূত্রে খবর, মোমিনপুর হিংসার তিনটি মামলায় সালাউদ্দিনের নাম উঠে এসেছিল। সেই সূত্রেই তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। গোয়েন্দাদের দাবি, এই ব্যক্তিই অন্যতম অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে, ভূকৈলাস রোড এলাকায় সালাউদ্দিনের ব্যবসা রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তের কোনও হদিশ মেলেনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাউন্টার টেরোরিজম এবং কাউন্টার র্যাডিক্যালাইজেশন ডিভিশন একটি এফআইআর নথিভুক্ত করার এবং বিষয়টির গুরুত্বের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেয়। এরপরে সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থার অভিযান শুরু হয়। এর আগে, কলকাতা হাইকোর্ট ঘটনার তদন্তে রাজ্য পুলিশকে সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের নিয়ে একটি বিশেষ তদন্ত দল (SIT) গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল।
কি ঘটেছে মোমিনপুরে
কলকাতার মোমিনপুরে পালিত হচ্ছিল লক্ষ্মী পূজা। এর পাশাপাশি ছিল মিলাদ-উল-নবীর উৎসব। সেখানে পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয় বলে অভিযোগ। রাস্তার ওপর রাখা বাইকগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর পাশাপাশি কয়েকটি ছোট গুমটি পুড়িয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। প্রবল হিংসার ভয়ে মানুষ ঘর ছেড়েছে। এলাকায় চলে বোমাবাজি, পাথর বৃষ্টি। পরে লোকজন ইকবালপুর থানায় গিয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ জানায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।