
ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের বিরুদ্ধে এবার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠল। আরজি কর আন্দোলনকে ব্যবহার করে ক্রাউড ফান্ডিংয়ের নামে টাকা তুলে সেই টাকা তছরুপ করার মত ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে "ন্যায়বিচার মঞ্চ" । মঞ্চের প্রেসিডেন্ট ও কনভেনর ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর নেতৃত্বে মঞ্চের সদস্যরা ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল সি.ভি.আনন্দ বোস, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং আর.জি.কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন । শুধু তাই নয় আরজি কর হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শ্যাম বাজার, কলেজস্ট্রিট, রবীন্দ্রসদন, যাদবপুর, টালিগঞ্জ, কালীঘাটসহ কলকাতার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ন্যায়বিচার মঞ্চের পোস্টার এবং জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের বিরুদ্ধে মঞ্চের সদস্যদের লিফলেট বিতরণ ও জনমত সংগ্রহ অভিযান করতে দেখা গেছে ।
এবার তারা কলকাতা প্রেস ক্লাবে সরাসরি প্রেসমিট করে এবং জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিল । প্রেসমিটে মঞ্চের কনভেনর ও সভাপতি ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলেন 'আমরা জুনিয় ডক্টরস ফ্রন্টের সদস্যদের জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে টাকার হিসেব দিয়ে বাকি টাকা ফেরৎ দেয়ার বার্তা দিচ্ছি । কারণ আন্দোলন চলার সময় আমরা জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে দেখা করে ও মেইল করে তাদের আর্থিক ভাবে স্বচ্ছ থাকতে অনুরোধ করেছিলাম । কিন্তু সেদিকে কর্ণপাত না করে শুরু থেকেই তারা চেয়েছিল আন্দোলনের নামে টাকা কামাতে । আর সেই জন্যই ওরা আন্দোলন চলার সময় হাসপাতালে ডিউটি না করে বহু অসহায় দরিদ্র মানুষকে চিকিৎসার অভাবে প্রাণ হারাতে বাধ্য করেছে কিন্তু নিজেদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস জারি রেখেছিল । কোন অনুষ্ঠানের নামে তোলাবাজি করে টাকা কামাতে পাড়ার গুণ্ডা মস্তানদের দেখা যায় কিন্তু ডাক্তার হয়ে আরেক ডাক্তারের মৃত্যুকে নিয়ে কেউ যখন টাকা উপার্জনের ব্যবসা করে তখন বোধ হয় সমগ্র মানবজাতিকে লজ্জায় মুখ ঢাকতে হয় । '
দেশের একাধিক প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যমে পড়লাম জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের সদস্যদের কয়েক কোটি টাকা দুর্নীতির করার কথা । শুধু তাই নয় শিল্পী অসিত সাই অভয়ার যে মূর্তি সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে বানিয়েছেন সেই শিল্পীর নামেও ভুয়ো বিল বানানো হয়েছে বলে ন্য়ায় বিচার মঞ্চের সদস্যরা শুনেছেন। তেমনই দাবি তাদের। 'আমাদের বিশ্বাস এই অসৎ ডাক্তাররাই আগামী দিনে কিডনি পাচার, অঙ্গ পাচার বা ওষুধের জাল চক্র চালানোর মত সামাজিক অপরাধে জড়িয়ে পড়বেন । কে বলতে পারে অভয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রেও হয়তো এরা জড়িত ছিল । পরে নিজেদের অপরাধ আড়াল করতেই আন্দোলনকারীর ভেক ধরে নিজেদের অপরাধ গোপন করছে ।' এমনই বলছেন ন্যায় বিচার মঞ্চেরসরস্যরা।
ন্যায়বিচার মঞ্চের প্রেসমিটে মানবাধিকার কর্মী রাজু ঘোষ বলেন আমরা ইতিমধ্যেই এই অসাধু ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে । আগামী দিনে এই সমস্ত অসাধু ডাক্তারদের সামাজিক এবং আইনি প্রক্রিয়ায় উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া তাদের একমাত্র লক্ষ্য । সমাজসেবী অনামিকা মন্ডল বলেন আগামী দিনে রাজ্যের সব জেলাতেই ন্যায়বিচার মঞ্চের কর্মীদের কার্যকর ভূমিকা পালন করতে দেখা যাবে । তারা যেমন ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে জাস্টিস দেওয়ার জন্য লড়ছি সেই রকম চন্দ্রচূড় বাবুর নেতৃত্বে এই অসাধু ডাক্তারদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করব । রাজ্যের এডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার আশুতোষ মজুমদার বলেন ন্যায়বিচার মঞ্চ অরাজনৈতিক হওয়ায় আমরা সকলেই এই মঞ্চের সাথে যুক্ত হতে পেরেছি । কারণ দিনের শেষে সত্য প্রতিষ্ঠার লড়ায়ে আমাদের সকলেরই সত্যের পাশে থাকা উচিৎ । জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার মঞ্চের এই প্রতিবাদী আন্দোলন আরেকটি সামাজিক আন্দোলনের সূচনা করল বলে মানুষের অনুমান ।