শহিদ দিবসের কর্মসূচির হোর্ডিং, ব্যানারে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাড়া আর কারও ছবি ব্যবহার করা যাবে না।
২৪-এর নির্বাচনের আগে মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য ২১ জুলাইয়ের সমাবেশকে হাতিয়ার করে এগোচ্ছে তৃণমূল। সেই লক্ষ্যেই এই বছর বৃহত্তর রাজনৈতিক সমাবেশ করতে উদ্যোগী মমতার দল। ধর্মতলায় কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হবে জমায়েতের প্রস্তুতি। শুধু তাই নয় এবার ২১ জুলাই জঙ্গলমহল-সহ উত্তরের জেলাগুলিতেও বিশাল সমাবেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এই বিশাল সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিশেষ নির্দেশিকা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। জানা গিয়েছে শহিদ দিবসের কর্মসূচির হোর্ডিং, ব্যানারে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাড়া আর কারও ছবি ব্যবহার করা যাবে না।
কেন এমন নির্দেশ! তৃণমূল সূত্রে খবর এ বারের সমাবেশকে পঞ্চায়েত ভোটে নিহত কর্মীদের জন্য শ্রদ্ধা দিবস হিসাবে পালন করা হবে। তাই প্রচারের ক্ষেত্রেও সে কথাটিও মাথায় রাখতে বলা হয়েছে সর্বস্তরের নেতাদের। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে এমন বড় সমাবেশের প্রচারকে ঘিরে কোনও অন্তর্দলীয় কোন্দল চাইছেন না তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই জেলা, ব্লক বা পঞ্চায়েত স্তরে প্রচারের জন্য দেওয়াল লিখন থেকে শুরু করে ব্যানার, হোর্ডিংয়ে দুই শীর্ষ নেতা ছাড়া আর কারও ছবি না ব্যবহার করার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশের পাশাপাশি, রাজ্য কমিটির পাঠানো সিডি অনুযায়ী দেওয়াল লিখন করতে হবে। হোর্ডিং, ব্যানার তৈরি করাতে হবে তাতে দেওয়া নির্দেশ মেনেই। সব প্রচারের ক্ষেত্রে নিজস্ব এলাকার সংগঠনের নাম লিখতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হতেই ২১ জুলাইয়ের প্রচার শুরু করেছেন তৃণমূলের বিধায়ক, কাউন্সিলররা। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদ-সহ একাধিক ইস্যুতে সুর চড়াবে তৃণমূল নেতৃত্ব। ১৯ তারিখ আসতে শুরু করবেন দলীয় কর্মীরা। শুধু তাই নয় এবারে চমক থাকছে বক্তা তালিকাতেও। সূত্রের খবর এবার নাম থাকতে পারে বীরবাহা হাঁসদা, জ্যোৎস্না মান্ডি, প্রকাশ চিক বরাইকদের। সমাবেশ সংক্রান্ত যে প্রচার কর্মসূচি করা হয়েছে, তা জেলা সভাপতিকে হোয়াটস অ্যাপে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে কোনও কর্মসূচির সঙ্গে দলের বিধায়ক ও শাখা সংগঠনের সদস্যদের শামিল করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
একথা স্পষ্ট যে ২১ জুলাই নিয়ে বড় পরিকল্পনা রয়েছে তৃণমূলের। পঞ্চায়েতের পর এখন ঘাসফুল শিবিরের পাখির চোখ লোকসভা নির্বাচন। প্রতিবছর ২১ জুলাই ধর্মতলায় শহীদ দিবস কর্মসূচি পালন করে তৃণমূল। ১৯৯৩ সালে মহাকরণ অভিযানে যুব কংগ্রেসের ১৩ জন কর্মী শহিদ হয়েছিলেন। সচিত্র পরিচয় পত্রের মাধ্যমে ভোট এই দাবি নিয়ে যুব কংগ্রেসের মহাকরণ অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নো আইডেন্টিটি কার্ড নো ভোট এই দাবিতে সরব হয়েছিল যুব কংগ্রেস। তৎকালীন যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেদিনের মহাকরণ অভিযান প্রতিহত করতে বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশ এলোপাথারি গুলি চালায়। গুলিতে ঝাঁঝরা হয় ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর দেহ। দলীয় কর্মীদের শহীদ স্মরণে প্রতিবছর দিনটি উদযাপন করে তৃণমূল। এ বছর তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে আগেই। গ্রামে শহরে সর্বত্রই একুশে জুলাই এর সমাবেশ সফল করতে প্রচারাভিযান শুরু হয়েছে।