
Kasba Crime News: কসবা ল কলেজের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রকে জেরায় পুলিশি তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জুনিয়র ছাত্রীদের শ্লীলতাহানিতে মাস্টার মাইন্ড ছিল এই মনোজিৎ মিশ্র ওরফে ম্যাঙ্গো। মহিলাদের উত্যক্ত করা, তাদের কম্প্রোমাইজ করিয়ে ব্ল্যাকমেল করে ভিডিয়ো তুলতে বাাধ্য করত সে। এমনকি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সে দিনের পর দিন এই কাজ করে গিয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে আরও খবর, তার এই কাজে মূল শাগরেদ ছিল জইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়। পুলিশি জেরায় এই দুজন স্বীকার করেছে যে, তারা ম্যাঙ্গো দাদার নির্দেশে এই সমস্ত ভিডিয়ো তুলত এবং সেগুলি বিভিন্ন হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পাঠাত তারা। এছাড়াও কলেজে বছরের দুবার পিকনিকের আয়োজন করত মনোজিৎ। আর ওই পিকনিক থেকেই জুনিয়রদের মাঝে 'শিকার' খুঁজত মনোজিৎ। পিকনিক থেকেই কোন ছাত্রীকে তুলবে সেই টার্গেট ফিক্স করে ফেলত ম্যাঙ্গো। এরপর ম্যাঙ্গো দাদার নির্দেশেই বাকি কাজ করত শাগরেদ জইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়।
পুলিশ সূত্রে আরও খবর, পিকনিকে টার্গেট হওয়া ছাত্রীকে দাদার পাশে বসানো থেকে, জায়গা ঠিক করে দেওয়া, অশালীন ভিডিয়ো রেকর্ড করা এই সমস্ত কিছুর দায়িত্ব ছিল জইব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায়ের কাঁধে। এমনকি মনোজিৎ পিকনিকে আকণ্ঠ মদ্য পান করে অশালীন আচরণ করত। এরপর পিকনিকের সেই সব কুকীর্তির ভিডিয়ো দেখিয়ে চলত ব্ল্যাকমেলের কাজ। ছাত্রীর বাড়িতে ভিডিয়ো পাঠিয়ে দেওয়ার ভয়, চলত পরীক্ষায় ফেইল করিয়ে দিয়ে কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকি। লোকলজ্জার ভয়ে শেষপর্যন্ত মনোজিতের যৌন হেনস্তার শিকার হতেন জুনিয়র ছাত্রীরা। আর নির্যাতিতার অভিযোগ দায়েরের পর এবার অনেকেই সাহস করে প্রকাশ্যে আনছে মনোজিৎয়ের একের পর এক কুকীর্তি।
উল্লেখ্য, কসবার আইন কলেজে ছাত্রীকে গণঘর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার মনোজিৎ মিশ্রের পক্ষ নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন তাঁর আইনজীবী রাজু গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, মনোজিৎ-কে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে। সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। ধর্ষণের ঘটনা যদি ঘটে থাকে, তাহলে অভিযুক্তের ঘাড়ে লাভ বাইট কী করে থাকতে পারে?
তিনি আরও বলেন, আমার মক্কেল কোনও অপরাধ করেনি। তাঁকে উদ্দেশ্য়প্রণোদিতভাবে দোষারোপ করা হচ্ছে। বিষয়টি এখন বিচারাধিন। তাই এই মুহূর্তে সমস্ত তথ্য প্রকাশ করতে পারছি না। তবে সময় এলে সত্য প্রকাশ্যে আসবে।… আমার মক্কেল ধর্ষণ করছে, এই অভিযোগ ঠিক নয়। সিসিটিভিতে যে অপহরণের কথা বলা হচ্ছে তাও ঠিক নয়। ভিযোগ, গত ২৫ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ১০টা ৫০ মিনিট, প্রায় ৩ ঘন্টা ২০ মিনিট ধরে কলেজের গার্ডস রুমে অকথ্য নির্যাতন চলে আইনের ছাত্রীদের ওপর। নির্যাতিতা শাসকদলের ছাত্র সংগঠনে কর্মী। পুলিশকে দেওয়া অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছেন, কলেজের প্রাক্তনী তথা প্রভাবশালী নেতার প্রেম তথা বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়ার অপরাধে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্তকে সহায়তা করেছেন আরও দুজন।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।