কলকাতার সরকারি আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৮-৯ আগস্ট ২০২৪ এর রাতে এক মহিলা চিকিৎসকের হত্যা হয়। হত্যার পূর্বে চিকিৎসককে ধর্ষণ করা হয় এবং তাকে অত্যন্ত নৃশংসভাবে নির্যাতন করা হয়। এই ঘটনা সমগ্র দেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসকরা ন্যায়ের দাবিতে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এই মামলায় আজকের দিনটি বিশেষ। আজ আদালত এই বিষয়ে রায় দেবে।
কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে হত্যা এভং শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ আনা হয়েছিল। শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা জজ অনির্বাণ দাসের এজলাসে মামলা শুরু হওয়ার ৫৭ দিন পরে রায় দেওয়া হবে।
৯ আগস্ট ২০২৪: আরজি কর হাসপাতালের তৃতীয় তলায় অবস্থিত সেমিনার হলে প্রশিক্ষণরত চিকিৎসকের মৃতদেহ অর্ধনগ্ন অবস্থায় পাওয়া যায়।
১০ আগস্ট ২০২৪: কলকাতা পুলিশ সঞ্জয় রায়কে আটক করে। সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসকরা হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
১২ আগস্ট ২০২৪: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মামলা সমাধানের জন্য কলকাতা পুলিশকে ৭ দিন সময় দেন। তিনি জানান, সাত দিনে কাজ না হলে মামলা সিবিআইকে সোপর্দ করা হবে। প্রতিবাদের কারণে আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ইস্তফা দিতে হয়।
১৩ আগস্ট ২০২৪: কলকাতা হাইকোর্ট মামলার নোটিশ নেয় এবং এটিকে "অত্যন্ত জঘন্য" অপরাধ বলে অভিহিত করে। আদালত প্রতিবাদকারী চিকিৎসকদের পুনরায় কাজে যোগদান করার আহ্বান জানায়। আরজি করের পূর্বতন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে দীর্ঘ ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্ট মামলাটি সিবিআইকে সোপর্দ করে। সিবিআই অভিযুক্তদের আটক করে।
১৪ আগস্ট ২০২৪: মামলার তদন্তের জন্য ২৫ সদস্যের সিবিআই দল গঠিত হয়। এতে ফরেনসিক দলও অন্তর্ভুক্ত ছিল। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তায় মিছিল করে প্রতিবাদ জানান। লক্ষ লক্ষ মানুষ রাতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান।
১৫ আগস্ট ২০২৪: মধ্যরাতে জনতা আর.জি. কর হাসপাতালে আক্রমণ করে এবং জরুরি বিভাগ এবং নার্সিং স্টেশনে ভাঙচুর চালায়। আই.এম.এ. ১৭ আগস্ট ২৪ ঘন্টার জন্য সারা দেশে সেবা বন্ধ রাখার আহ্বান জানায়।
১৬ আগস্ট ২০২৪: পুলিশ ভাঙচুরের অভিযোগে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।
১৮ আগস্ট ২০২৪: ঘটনার নোটিশ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট মামলার শুনানি ২০ আগস্টের জন্য নির্ধারণ করে।
১৯ আগস্ট ২০২৪: সিবিআই সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে অভিযুক্তের উপর পলিগ্রাফ পরীক্ষা করার অনুমতি দেওয়া হয়।
২০ আগস্ট ২০২৪: তৎকালীন CJI ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য এবং একটি জাতীয় প্রোটোকল প্রণয়নের জন্য ১০ সদস্যের টাস্ক ফোর্স গঠন করে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং কলকাতা পুলিশকে একটি প্রতিবেদন পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
২১ আগস্ট ২০২৪: কেন্দ্র কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আরজি কর হাসপাতালের নিরাপত্তার ভার গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়। কলকাতা পুলিশ ভাঙচুরের অভিযোগে তিন জন আধিকারিককে সাসপেন্ড করে।
২৪ আগস্ট ২০২৪: প্রধান অভিযুক্ত এবং অন্য ৬ জনের উপর পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা হয়।
২৫ আগস্ট ২০২৪: সিবিআই সন্দীপ ঘোষের বাড়ি এবং অন্য ১৩ টি স্থানে তল্লাশি অভিযান চালায়।
২ সেপ্টেম্বর ২০২৪: আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ থাকাকালীন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে সিবিআই সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪: সিবিআই ধর্ষণ এবং হত্যা মামলায় এফআইআর দায়েরে বিলম্ব এবং প্রমাণ লোপ করার অভিযোগে সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে আবার গ্রেপ্তার করে।
৭ অক্টোবর ২০২৪: সিবিআই সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।
৪ নভেম্বর ২০২৪: শিয়ালদহ আদালতে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে সিবিআই অভিযোগ নির্ধারণ করে।
১১ নভেম্বর ২০২৪: আদালতে বিচার শুরু হয়।
১২ নভেম্বর ২০২৪: অভিযোগপত্র দাখিল করতে বিলম্বের কারণে মামলার অভিযুক্ত অভিজিৎ মণ্ডল এবং সন্দীপ ঘোষ জামিন পান। ধর্ষণ এবং হত্যা মামলায় বন্ধ কক্ষে শুনানি শুরু হয়।
২৯ নভেম্বর ২০২৪: সিবিআই আরজি কর আর্থিক অনিয়মের মামলায় ১২৫ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। সন্দীপ ঘোষের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৮ জানুয়ারী ২০২৫: শিয়ালদহ আদালত মামলায় তার রায় ঘোষণা করবে।