'তোমায় হৃদ মাঝারে রাখবো’ যুবভারতীর গ্যালারি তখন সুনীলময়, একঝলকে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত

ঘড়িতে ঠিক রাত ৯.১০ মিনিট। যুবভারতীর টানেল দিয়ে শেষবারের জন্য জাতীয় দলের জার্সি গায়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যেন ভারতীয় ফুটবলে একটি যুগের সমাপতন।

ঘড়িতে ঠিক রাত ৯.১০ মিনিট। যুবভারতীর টানেল দিয়ে শেষবারের জন্য জাতীয় দলের জার্সি গায়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যেন ভারতীয় ফুটবলে একটি যুগের সমাপতন।

কার্যত, দেশের ফুটবল ইতিহাসে এক কিংবদন্তীর অবসর। নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলে ফুটবলকে আলভিদা জানালেন সুনীল ছেত্রী। বিশ্বকাপের যোগ্যতানির্ধারণী ম্যাচে কুয়েতের বিরুদ্ধে ড্র করল ভারত। কিন্তু ম্যাচ শেষে কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন যেন এক আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে রইল।

Latest Videos

গোটা মাঠ প্রদক্ষিণ করলেন ক্যাপ্টেন, লিডার এবং লেজেন্ড সুনীল ছেত্রী। সল্টলেক স্টেডিয়ামের গ্যালারি জুড়ে তখন গর্জন, ‘সুনীল-সুনীল’। গায়ে কাঁটা দেওয়া সেই মুহূর্তের সাক্ষী থাকল গোটা স্টেডিয়াম আর মুখে তখন সবার সুনীলের মুখোশ। যেন প্রিয় ক্যাপ্টেনকে বিদায় জানানোর এক অপ্রিয় মুহূর্ত।

সুনীল হাঁটলেন, হাত নাড়লেন এবং সেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে নমস্কার জানালেন দর্শকদের। কুয়েত দলের কোচও এগিয়ে গেলেন, জড়িয়ে ধরলেন তাঁকে। তারপর ভারতীয় দলের ফুটবলাররা দুই পাশে দাঁড়িয়ে গড়লেন মানব প্রাচীর। মাঝখান দিয়ে এগিয়ে চললেন ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। কিন্তু এবার আর আবেগকে ধরে রাখতে পারলেন না। চোখে জল, দু-হাত দিয়ে মুখ ঢাকলেন। কিন্তু তিনি যে সুনীল, হার মানতে জানেন না। ফের একবার হাসিমুখে এগিয়ে গেলেন টানেলের দিকে।

সুনীলের বিদায়ী ম্যাচ বলে কথা। এসেছিলেন অনেকেই। প্রাক্তন ফুটবলার সাব্বির আলি, রহিম নবি, আইএম বিজয়ন, আলভিটো ডি কুনহা সহ আরও অনেকে। সুনীলের জন্য গ্যালারি জুড়ে ছিল টিফো। কোথাও লেখা ‘থ্যাঙ্ক ইউ ক্যাপ্টেন’ তো কোথাও আবার ‘সোনার সুনীল, তোমায় হৃদ মাঝারে রাখবো’। এই আবেগকে হয়ত কখনোই পরিমাপ করা সম্ভব নয়, কারণ সবটাই সুনীলময়।

অন্যদিকে, কলকাতার তিন প্রধান মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান ক্লাবের পক্ষ থেকেও সুনীলকে সংবর্ধিত করা হয়। মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত, ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার, মহামেডান কর্তা বিলাল খান, ফুটবল সচিব দীপেন্দু বিশ্বাস সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন এদিন। সেইসঙ্গে, আইএফএ-র তরফ থেকে সচিব অনির্বাণ দত্ত এবং অন্যান্য কর্তারা মিলে সুনীলের হাতে তুলে দেন সংবর্ধনা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের তরফ থেকে সভাপতি কল্যাণ চৌবে স্মারক তুলে দেন জাতীয় দলের অধিনায়কের হাতে। আর কলকাতায় এলে লজেন্স মাসি সুনীলকে দেখতে যাবেন না, তা কি হতে পারে? শেষ ম্যাচে নামার আগে লজেন্স মাসির আদর নিয়েই ড্রেসিংরুমে গেলেন জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক।

আর যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের দিয়ে গেলেন খোলা চিঠি। সুনীল লিখলেন, “আপনাদের সঙ্গে অনেকবার দেখা হয়েছে। খুব ভালো কাটল দিনগুলো। আমার কথাগুলো সবার সামনে তুলে ধরার জন্য সকলকে ধন্যবাদ। ভারতীয় ফুটবলের জন্য আপনাদের কাজ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। সকলকে অনেক ভালোবাসা। ভালো থাকবেন সবাই।”

আর সুনীলের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখতে মাঠে হাজির ছিলেন তাঁর বাবা খর্গ ছেত্রী, স্ত্রী সোনম ভট্টাচার্য সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। আগেই রিয়াল মাদ্রিদ তারকা লুকা মদরিচ শুভেচ্ছা জানান তাঁকে। এবার বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ফিফা-র তরফ থেকেও এল শুভেচ্ছাবার্তা।

সবমিলিয়ে, বেশ কিছু ঐতিহাসিক মুহূর্তকে সঙ্গী করেই শেষ হল সুনীল যুগ।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

Read more Articles on
Share this article
click me!

Latest Videos

Mamata Banerjee: 'মোদী কিছু দেয় নি আমি ৫০ লক্ষ বাড়ি দিয়েছি' বিতর্কিত মন্তব্য মমতার
দেরিতে আসায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে কড়া ধমক MLA অসিত মজুমদারের, দেখুন ভিডিও
বাগদায় ফের চলল বুলডোজার! হাইকোর্টের নির্দেশে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল ৬টি দোকান | Bagdah News
Guyana-র সরস্বতী বিদ্যা নিকেতন স্কুলে Narendra Modi, কথা বললেন পড়ুয়াদের সঙ্গে
‘সবরমতি রিপোর্ট’ দেখলেন বিজেপির হেভিওয়েটরা! দেখুন কী বার্তা দিলেন সিনেমার ব্যপারে | Sabarmati Report