রহস্যে মোড়া আরজিকর কাণ্ড! প্রাথমিক তদন্তে খুনের অনুমান, সহকর্মীরও তাই দাবি, কী ঘটেছিল সেদিন?
অত্যন্ত মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে ছিলেন আরজি কর হাসপাতালের মৃত চিকিৎসক। পানিহাটিতেই বসবাস ছিল তাঁর। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি। ছেলে বেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন তরুণী।
পানিহাটিরই চন্দ্রচূড় স্কুলের কৃতী ছাত্রী। একবারেই ডাক্তারি পরীক্ষায় দারুণ ফল করেন। আরজি করের রোগীর পরিষেবায় ছিলেন তরুণী। কিন্তু এর রাত্রের মধ্যেই যেন সব শেষ হয়ে গেল। ধূলোয় মিশে গেল মা-বাবার স্বপ্ন। অকালেই প্রাণ হারালেন চিকিৎসক।
তবে এই মৃত্যু ঘিরে তীব্র রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। আদৌ আত্মহত্যা না খুন তা জানতে তৎপর হয়েছে পুলিশ। ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শহরবাসীরাও। ইতিমধ্যেই একজনকে আটক করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম সঞ্জয় রায়। তরুণীর দেহের পাশ থেকে তার হেডফোনের অংশ পায় পুলিশ। শুক্রবার রাতেই গ্রেফতার করা হয় তাকে। কিন্তু কেন এই খুন? না ধর্ষণ করে খুন? তা নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতেও খাবার খাওয়ার পরে মা-বাবার সঙ্গে কথা হয়েছিল। কিন্তু তার পরের ফোনটাতেই যেন আকাশ ভেঙে যায়। হাসপাতাল থেকে একটি ফোনে জানায় যে তরুণী নাকি আত্মঘাতী হয়েছে।
প্রথমে কিছুতেই বিশ্বাস করেননি বাবা-মা, প্রতিবেশীরা। কেন আত্মঘাতী হবেন সফল চিকিৎসক। তরণীকে খুন করা হয়েছে বলেই দাবি করেছেন তাঁরা। মেয়েকে দেখতে এসে মা জানান, " আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। একটা মাত্র মেয়ে আমার। অনেক কষ্টে চিকিৎসক বানিয়েছিলাম। "
মেয়ের বাবা জানান, " আমার মেয়েকে আর ফিরে পাব না. মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। উনি বলেছেন যতটা পারব চেষ্টা করব।"
তরুণীর বাবা-মা অভিযোগ করেছেন প্রথমে তরুণীর মৃতদেহ দেখতেই দেওয়া হয়নি । হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন তাঁরা। অন্যদিকে মৃত চিকিৎসকের সহকর্মীও জানিয়েছেন যে এটা খুন। এটা অত্যন্ত সাসপিসিয়াস সারকামটেন্সেস মনে হয়েছে।"
এ প্রসঙ্গে ফরেনসিক টিম জানিয়েছেন, ঠোঁটে, গালে, গলায় মার্ক রয়েছে। দেহ চিৎ অবস্থায় শোয়ানো ছিল। "আমরা যখন গিয়েছিলাম , দেহ পুরো ঢাকা অবস্থায় ছিল। এটা বাইরের কেউ নয়, চেনা লোকেরই কাজ, কারণ দেহ সেমিনার হলে ছিল। ওয়ার্ড অনেকটাই দূরে। সেমিনার হলে বাইরের কেউ প্রবেশ করতে পারে না।"
প্রাথমিক ভাবে খুন বলেই অনুমান করছে পুলিশ। ছাত্রীর শরীরের উপরের অংশে কাপড় ছিল কিন্তু নিচের অংশে কাপড় ছিল না। বৃহস্পতিবার নাইট ডিউটি ছিল তরুণীর। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ নাগাদ সেমিনার রুম থেকে তাঁর মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়।