
Kolkata: বাড়ি বাড়ি দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ পাঠানো নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যে দাবি করেছিলেন এবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তার তীব্র প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। খাদ্য দফতরের প্রকল্প ‘দুয়ারে রেশন’-এর মাধ্যমে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদের বাক্স রাজ্যজুড়ে সমস্ত বাড়িতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তার জন্য এলাকার ভালো মিষ্টির দোকানের তালিকাও চাওয়া হয়েছে এসডিও ভিডিও দের থেকে
তা নিয়ে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মন্দিরের প্রসাদ হিসেবে কেন পাড়ার দোকানের মিষ্টি দেওয়া হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি এতে হিন্দুদের আস্থায় আঘাত করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। সেই নিয়েই এবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে একহাত নিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন।
শুক্রবার রবীন্দ্র সদনে সাংবাদিক বৈঠক থেকে বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপিকে একহাত নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, ''হঠাৎ করেই জগন্নাথ ধামের মহা প্রসাদ নিয়ে কিছু মানুষের কিছু কুরুচি পূর্ণ মন্তব্যের কথা জানতে পেরে আমরা মর্মাহত। এই সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে আমার বিশ্বাস বাংলার মানুষ বিব্রত হবে না। মুখ্যমন্ত্রীকে পেয়ে আমরা গর্বিত। বাংলার মানুষ কি চায়, বাংলার মানুষের কি প্রয়োজন তিনি অনুভব করেন সেই জন্য তিনি দিনরাত মগ্ন থাকেন। উনি কোনও ধর্মীয় মেরুকরণে বিশ্বাস করেন না। ওনার কোথায়, ধর্ম আমার ধর্ম তোমার, মহাপ্রসাদ সবার। শুধু হিন্দুরা প্রসাদ পাবেন, বা কোনও হিন্দু ডিলাররা প্রসাদ বিতরণ করবেন এরকম কোনও সরকারি নির্দেশিকা নেই। আমি এইধরনের মন্তব্যের প্রবল ধিক্কার জানাই। দীঘার এই কাজ ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।''
মন্ত্রী আরও বলেন, ''এটা নাকি হিন্দুদের সেন্টিমেন্টে আঘাত করা হয়েছে। আমি ধিক্কার জানাই। ২০১১ সালের পর থেকে তারাপীঠ, তারকেশ্বর, কঙ্কালীতলা সহ পশ্চিমবঙ্গের উত্তর থেকে দক্ষিণে সব মন্দিরের সৌন্দর্যায়ন বা অন্যান্য কাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন। অন্য কেউ এই দিকে নজর দেননি।'' এদিন নাম না করে শুভেন্দুকে খোঁচা দিয়ে তিনি আরও বলেন, ''উনি চেয়েছেন সরকারের এই প্রক্রিয়াকে পর্দা ফাঁস করবেন। উনারা বুঝে গেছেন এই হিন্দুত্বের তাস ফেলে বাংলাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবেন না। বাংলার প্রায় ১১ কোটি মানুষের মধ্যে অনেকে সাধ থাকে বা সাধ্য থেকে না। অনেকের ইচ্ছা জগন্নাথ দেবের পুজো দিয়ে তার মহা প্রসাদ পাওয়ার। যাতে বাংলার সব ঘরের সব মানুষ যাতে এই মহা প্রসাদ পান। আমরা পর্যায়ক্রমে খোয়া জগন্নাথের চরণে সমর্পণ করে আমরা বিভিন্ন জেলায় এটা সরবরাহ করি। সেখান থেকে এই খোয়া দিয়ে প্রসাদ বানানো হচ্ছে জেলায় জেলায়।''
''এটা ৭ ৮ দিনের বেশি থাকে না। এই ভাবেই বিভিন্ন জেলায় যাবে। বাংলার প্রত্যেকের বাড়িতে এটি দেওয়া হবে। হিন্দু হোক বা মুসলমান সবার বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রমাণ করতে হয় না। ওনার মত সেক্যুলার এডমিনিস্ট্রেটর ভারতবর্ষ এই আগে দেখেনি। ভয়ে এত হিন্দু মুসলমান করে এরা। মানুষের টাকাতেই সরকার চলে। মানুষের টাকাতেই এই মন্দির হয়েছে। তার টাকাতেই এই প্রসাদ সবার বাড়িবাড়ি পৌঁছাবে।''
শুধু তাই নয়. দীঘার জগন্নাথদেব মন্দিরের প্রসাদ রাজ্যের সব বাসিন্দার বাড়ি-বাড়ি পৌঁছানো নিয়ে ইন্দ্রনীল সেন আরও বলেন, ''পশ্চিমবঙ্গের সব বাড়িতে যাবে। রেশন ডিলারদের মাধ্যমে যাবে। প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে যাবে এটি। উপকরণ বলে দেওয়া হয়েছে। এবং ফুড কোয়ালিটি ইন্সপেক্টররা এই বিষয়টি রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। ডিস্ট্রিবিউশন তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর দেখছে। ২৭ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত চলবে রথযাত্রা। ৫ তারিখ উল্টোরথ। তার মধ্যেই রাজ্যের সকল জেলাগুলিতে একসঙ্গে পৌঁছে দেওয়া হবে প্রসাদ।''
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।