গাছের সঙ্গে শিকলে বাঁধা আদিবাসী মহিলা, অমানবিক দৃশ্যের পিছনে লুকিয়ে কোন কাহিনি, দেখুন

অপুষ্টিতে ভোগা এক আদিবাসী মহিলা

তাকেই শিকল দিয়ে বেঁধে পাখা হয়েছিল গাছের সঙ্গে

পুলিশ খবর পেয়ে গিয়ে উদ্ধার করল

মালদার এই ঘটনার পিছনে লুকিয়ে কোন কাহিনী

 

amartya lahiri | Published : Jun 16, 2021 11:19 AM IST / Updated: Aug 29 2021, 07:07 PM IST

চরম অমানবিক দৃশ্য! আদিবাসী মহিলার শরীরে পুষ্টির অভাব স্পষ্ট। খোলা আকাশের নিচে একটি গাছের গুঁড়ির সঙ্গে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছে লোহার শিকল দিয়ে। অভিযোগ, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন, পাড়া প্রতিবেশীদের সমস্যা সৃষ্টি করছেন। তাই, তাঁকে ওইভাবেই রেখে দিয়েছিল তাঁর পরিবার। বুধবার, মানবতা লঙ্ঘনের এমনই করুণ ছবি উঠে এল মালদা জেলা থেকে।

পুরাতন মালদা থানার ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের কুতুবপুর গ্রাম। জানা গিয়েছে, আদিবাসী ওই মহিলার নাম সুজি মুর্মু (৩৬)। বুধবার দুপুরে কয়েক জন গ্রামবাসী শিকলবন্দি অবস্থায় তাঁকে দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই আদিবাসী মহিলাকে উদ্ধার করে।
 পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলা আশ-পাশের বাড়ির গাছের ফুল, ফল পেড়ে নেয়, যাকে-তাকে ইট-পাটকেল ছোড়ে। পাড়া-প্রতিবেশীরা অভিযোগ জানালে বাধ্য হয়েই তাঁকে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছিল।

আপাত দৃষ্টিতে ছবিটা অত্যন্ত অমানবিক হলেও, এর পিছনে রয়েছে দারিদ্র ও বাধ্যবাধকতার কাহিনীও। তাঁর ভাইয়ের বউ আরতী মুর্মু জানিয়েছেন, সুজি মুর্মুর দুই নাবালক পুত্র-কন্যাও আছে। তাঁর স্বামী নন্দ টুডু কয়েক বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান। এরপর থেকে, ভাই আমিন মুর্মুর বাড়িতে থাকতেন তিনি। মাস গত চারেক আগে থেকেই হঠাৎ মানসিক ব্যধিতে আক্রান্ত হন সুজি মুর্মু। তাঁর চিকিৎসার পিছনে ইতিমধ্য়েই সতেরো হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। আরতী জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা বলেছেন, সুজির সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগবে। কিন্তু দীর্ঘ চিকিৎসার খরচ চালানোর মতো আর্থিক অবস্থা নেই তাঁদের।

তাই পুলিশের নির্দেশে আপাতত সুজিকে মুক্ত করা হলেও, কতদিন তাঁকে ওভাবে রাখা যাবে, তাই নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আরতী মুর্মু জানিয়েছেন, তাঁরা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। প্রত্যেককেই কাজে কর্মে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই সুজি মুর্মুকে চোখে চোখে রাখার মতো লোক নেই।  

 

Share this article
click me!