বাংলা কেন, গোটা দেশের কোথাওই এনআরসি হবে না। এ দিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের কেন্দ্রীয় সরকারি শ্রমিক সংগঠনের সভায় এমনই দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, এনআরসি নিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে কিছু মানুষ। এনআরসি নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এ দিন নাম না করেই বিজেপি-কেও আক্রমণ করেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন অভিযোগ করেন, এনআরসি নিয়ে আতঙ্কে ইতিমধ্যেই বাংলায় ছ' জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা যে এলাকার বাসিন্দা ছিলেন, সেখানে দলকে বিক্ষোভ সভা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এনআরসি-র জন্য যখাযখ নথি আছে কি না, তা নিয়েও সন্দিহান অনেকে। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এ দিন আশ্বস্ত করে বলেন, 'কে বলেছে যে এনআরসি-র জন্য ১৯৭১ সালের কাগজ দেখাতে হবে? আমার কাছে আমার জন্মের শংসাপত্র চাইলেও তো আমি দেখাতে পারব না। তাহলে আপনারা চিন্তা করছেন কেন। কোনও কাগজ হারিয়ে গেলে সবার আগে পুলিশে অভিযোগ করুন।'
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বার বারই ভোটার লিস্টে নাম তোলার উপরে জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ভোটার লিস্টে নাম তুলতে সমস্যা হলে এলাকার তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। তাঁরা সাহায্য না করলে 'দিদিকে বলো'-র হেল্পলাইন নম্বরে অভিযোগ জানাতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। দলীয় বিধায়কদেরও ভোটার লিস্টে নাম তোলার বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- এবিসি ভুলিয়ে এখন এনআরসি শেখাচ্ছে, কেন্দ্রকে তোপ সূর্যকান্তর
আরও পড়ুন- রাজ্যে এনআরসি আতঙ্কে মৃত্যু মিছিল, তিন দিনে মৃত পাঁচ
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এনআরসি করতে গেলে রাজ্য সরকারেরই সাহায্য লাগবে। আর তাঁর সরকার কোনওদিনই তাতে রাজি হবে না বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন এনআরসি নিয়ে আশ্বস্ত করতে প্রতিবেশী বিহার এবং ত্রিপুরার উদাহরণ টানেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বিহারে নিতীশ কুমার বলে দিয়েছেন তিনি এনআরসি-র বিরোধী। ত্রিপুরাতে করুক না, সবার আগে ওখানকার মুখ্যমন্ত্রীর নাম বাদ যাবে।' এ ভাবেই বার বার আমজনতার ভয় কাটানোর চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, চুক্তি থাকাতেই অসমে এনআরসি চালু হয়েছে। অন্য কোথাও তা হবে না।
এ দিন নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও এনআরসি আতঙ্ক নিয়ে মন্ত্রীদের সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলায় জেলায় কারা এনআরসি নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, তাদের উপরে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য়মন্ত্রী। সাধারণ মানুষকে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বোঝানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে এয়ার ইন্ডিয়া, অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরির মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বিলগ্নিকরণের প্রতিবাদেও দলকে রাস্তায় নামার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ১৮ অক্টোবর শিয়ালদহ থেকে ফেয়ারলি প্লেস পর্যন্ত মিছিল করার ঘোষণা করেছেন তৃণমূলনেত্রী । ২৬ এবং ২৭ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরগুলির বাইরে বিক্ষোভ দেখানোর নির্দোশ নির্দেশ দিয়েছে মমতা।