সংক্ষিপ্ত
- রাজ্যে এনআরসি আতঙ্কে মৃত্যু মিছিল অব্যাহত ।
- শুক্রবার একদিনে ৩জনের মৃত্যুর পর রবিবারের মধ্য়ে মারা গিয়েছেন আরও ২জন ।
- ৩দিনে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি আতঙ্কে মৃতের সংখ্যা দাড়ালো ৫
রাজ্যে এনআরসি আতঙ্কে মৃত্যু মিছিল অব্যাহত । শুক্রবার একদিনে ৩জনের মৃত্যুর পর রবিবারের মধ্য়ে মারা গিয়েছেন আরও ২জন । সব মিলিয়ে বিগত ৩দিনে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি আতঙ্কে মৃতের সংখ্যা দাড়ালো ৫ ।
নাগরিকপঞ্জীর জন্য প্রয়োজনীয় নথি জোগাড় করতে না পেরে রবিবারও আত্মহত্যা করেছেন আরও একজন। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার সোলাদানা এলাকায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন কামাল হোসেন মন্ডল । মৃতের পরিবারের দাবি, রাজ্যে এনআরসি আতঙ্ক চেপে বসার পর থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন ওই ব্যক্তি। বিভিন্ন সরকারি দফতরে পরিবারিক সরকারি নথি জোগাড়ের চেষ্টা করেও কাজ হয়নি। শেষে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্য়ার পথ বেছে নেন কামাল হোসেন। পেশায় দিনমজুর কামালের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায় বাড়ির পিছনের আমবাগানে। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা ।
দেশের সাম্প্রতিক চিত্রপট বলছে, জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর জেরে জেরবার অবস্থা হয়েছে অসমবাসীর। ইতিমধ্য়েই এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লক্ষ মানুষ। যাদের মধ্য়ে বেশিরভাগই বাংলাভাষী। বহু হিন্দুদের নামও রয়েছে বাতিলের তালিকায়। সম্প্রতি অসমের পর পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি প্রয়োজন বলে দাবি তোলে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, রাজ্যে ২ কোটি মুসলিম অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়েছে । এক কোটি পশ্চিমবঙ্গে থাকলেও বাকিরা রাজ্য থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। এই অনুপ্রবেশকারীরাই রাজ্যে অপরাধমূলক কাজ করছে। রাজ্যে শান্তি নষ্ট করছে। সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে এনআরসি চালু হলে এদের সবাইকে বিতারিত করা যাবে। যদিও রাজ্য়ে এনআরসির ঘোর বিরোধিতা করছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। এনআরসি বিরোধিতায় সিপিএম ও কংগ্রেসকেও পাশে পেয়েছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে রাজ্যে এনআরসি প্রয়োজন নেই বলে জানিয়ে এসেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু ডিজিটাল রেশন কার্ড সংশোধনীকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্যে। অনেকে ডিজিটাল রেশন কার্ডকেই এনআরসির নথি বলে গুজব ছড়াচ্ছেন।
যার ফলে সরকারি নথি না পেলেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন অনেকেই। এক সময় আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হচ্ছে তাঁদের। ইতিমধ্য়েই বাংলাদেশ সংলগ্ন উত্তর ২৪পরগনার বসিরহাট এলাকার মাটিয়া ও হিঙ্গলগঙ্গে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় মন্টু মন্ডল ও আলিয়া বেওয়ার । জলপাইগুড়ি ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় মৃত্যু হয়েছে অন্নদা রায় ও মন্টু সরকার নামে আরও দুই জনের । বিগত ৩দিনে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি আতঙ্কে রাজ্যটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫ জন । এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দুঃখ প্রকাশ করে মানুষকে আতঙ্কিত হতে বারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রাজ্যবাসীকে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি থাকতে রাজ্যে এনআরসি হবে না।