শ্বশুরবাড়িতে মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করছিলেন এক যুবক। কিন্তু উল্টো বুঝলেন এক প্রতিবেশী। স্রেফ সন্দেহের বসেই বেধড়ক মারধর করা হল ওই মদ্যপ যুবককে! শেষপর্যন্ত মারাও গেলেন তিনি। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায়। নিহতদের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: একসঙ্গে উদ্ধার ষাট হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট, মাদকের গ্রাসে মালদহ
মৃতের নাম কাজু তুড়ি। বাড়ি, বোলপুরের জামবনিতে। বর্ধমানের গুসকরা শহরে খয়রাপাড়ায় কাজুর শ্বশুরবাড়ি। কাছে ধারাপাডায় থাকেন তাঁর এক শ্যালিকা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শ্যালিকার বাড়িতে কালীপুজো উপলক্ষ্যে সোমবার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে গুসকরায় এসেছিলেন কাজু। রাতে শ্যালিকার বাড়িতে খাওয়া-দাওয়াও করেন সকলেই। বেশি রাতে সপরিবারে খয়রাপাড়া শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসেন কাজু। কাজুর স্ত্রীর দুর্গার বক্তব্য, 'পুজো উপলক্ষ্যে আমার স্বামী মদ্যপান করেছিল। বাড়ি ফেরার পর আবার শ্যালিকার বাড়ি যেতে চাইছিল। আমি ও আমার বোন বাধা দিই। কিন্তু জোর করে আমার স্বামী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়, আমরা ওঁকে ফেরানোর চেষ্টা করছিলাম।' এদিকে শ্বশুরবাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে যখন মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীকে গালিগালাজ করছিলেন কাজু, ঠিক তখনই পাশের বাড়ির এক গৃহবধূ মণিকা দুবে তাঁদের বাড়ি দরজা বন্ধ করতে আসেন বলে জানা গিয়েছে। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। মণিকা ভেবে বসেন, তাঁকে গালিগালাজ করছেন কাজু! অন্তত তেমনই দাবি নিহতের পরিবারের লোকেদের। তাঁদের দাবি, মদ্যপ কাজুকে বেধড়ক মারধর করেন মণিকার দেওর-সহ পরিবারের অন্যরা।
আরও পড়ুন: সালিশি সভায় নাবালিকার বিয়ের নিদান, প্রতিবাদ করায় মা- মেয়েকে বিবস্ত্র করে মার
বেধড়ক মার খেয়ে শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যায় কাজু। কিছুক্ষণ পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে কাজু তুড়ি মারা যান বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এলাকায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দোষীদের শাস্তির দাবিতে মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মৃতের পরিজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। শেষপর্যন্ত পুলিশ তিনজনকে আটক করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। গুসকরা থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত পলাতক।