বুদ্ধদেব পাত্র, পুরুলিয়া: জেলায় এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের হদিশ মেলেনি। কিন্তু, অসাবধানতায় বিপদ হতে কতক্ষণ! কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য শেষে কিনা পরিত্যক্ত শৌচাগারে আশ্রয় নিলেন যুবক! ফের সচেতনতার নজির পুরুলিয়ায়।
আরও পড়ুন: আইসোলেশন ওয়ার্ডেও ঢুকল 'মারণ ভাইরাস', করোনায় আক্রান্ত হলেন রোগী
পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের কুচিয়া গ্রামে থাকেন মহাদেব সিং। অভাবে সংসার নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা। দুটি মাটির ঘরে থাকেন পরিবারের ছ'জন সদস্য। জানা গিয়েছে, মাস কয়েক আগে হাওড়ায় শ্রমিকের কাজ করতে যান মহাদেব। লকডাউনে জেরে সমস্য়ায় পড়েন তিনি। কাজকর্ম বন্ধ, রোজগার নেই। হাতে সামান্য যেটুকু টাকা-পয়সা ছিল, তাও শেষ হয়ে যায়। এভাবে আর কতদিন চলবে! শেষপর্যন্ত এক বন্ধু থেকে সাইকেল নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন ওই যুবক। তিন দিন পর পৌঁছন গ্রামের বাড়িতে।
লকডাউনের বাজারে যাঁরা বাড়ি ফিরছেন, করোনা সতর্কতায় তাঁদের কোয়ারেন্টাইনের থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। সেকথা জানতেন মহাদেবও। কিন্তু বাড়িতে আলাদা ঘর নেই, তাহলে থাকবেন কোথায়? গ্রামের অদূরে একটি পরিত্যক্ত শৌচাগারে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যেমন ভাবা, তেমনি কাজ। এভাবেই কেটে যায় ছ'দিন।
ঘটনার খবর পেয়ে তৎপর হয় জেলা প্রশাসন। বান্দোয়ানের বিডিও নিজে দিয়ে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন মহাদেবকে। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানিয়েছেন, 'ওই যুবককে হোম কোরায়েন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিডিও বিষয়টি দেখছেন।'
উল্লেখ্য, করোনা সতর্কতায় এমন ঘটনা যে পুরুলিয়ায় প্রথম ঘটল, তা কিন্তু নয়। প্রথম পর্বের লকডাউনে চেন্নাই থেকে পর গাছে হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন বলরামপুরের ভাঙিডি গ্রামের সাত যুবক। সেই খবর এশিয়ানেট নিউজ বাংলায় প্রকাশিত হওয়ার পর নড়চড়ে বসে প্রশাসন। গাছ থেকে নামিয়ে ওই যুবকদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রাখার ব্যবস্থা হয়।