পণ দেওয়াকে কেন্দ্র করে নিজের বিয়ের আসরে হেনস্থা শিকার এক তরুণী। হবু স্ত্রীকে খোদ পাত্রই লাথি মেরেছে বলে অভিযোগ। মেয়ের বাড়িতে তাণ্ডব চালাল পাত্রের বাড়ির লোকেরাও। শেষপর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দারা যখন রুখে দাঁড়ান, তখন পালিয়ে যায় বরযাত্রীরা। তবে ক্ষতিপূরণের দাবিতে পাত্র-সহ আটজনকে মেয়ের বাড়ির লোকেরা আটকে রেখেছেন বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যানিংয়ে। থানায় অবশ্য কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে পুলিশ।
পাত্রীর বাড়ি ক্যানিংয়ে জয়রাম খালি গ্রামে। পরিবারের আর্থিক অবস্থায় একেবারেই ভালো নয়। হতদরিদ্রই বলা চলে। মাস ছয়েক আগে বীরু দাস নামে এক যুবকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধ করেন বাড়ির লোকেরা। তাঁদের দাবি, বীরুর সঙ্গে ওই তরুণীর রেজিস্ট্রি বিয়েও হয়ে গিয়েছিল। হবু শ্বশুরবাড়িতে যাতায়াতও ছিল ওই যুবকের। সামাজিক বিয়ে হওয়ার কথা রবিবার। গোল বাঁধল সেদিনই। পাত্রীপক্ষের দাবি, প্রথমে কুড়ি হাজার টাকা পণ চেয়েছিল বীরুর বাড়ির লোকেরা। পরে আরও পাঁচ হাজার টাকা দাবি করা হয়। তাতেও রাজি হয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু বিয়ের দিন নানাভাবে ছেলের বাড়ির লোকেরা মেয়ের বাড়ির লোকেদের বিপাকে ফেলার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। মেয়ের বাড়ির লোকেদের বক্তব্য, বিয়ের লগ্ন ছিল রাত দশটা। কিন্ত বরযাত্রীদের সঙ্গে বীরু বিয়ে আসে রাত দেড়টার সময়ে। ততক্ষণে খাওয়া-দাওয়া করে চলে গিয়েছেন আমন্ত্রিতরা। তড়িঘড়ি বীরু ও তার হবু স্ত্রীকে ছাতনা তলায় বসিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু করে দেন পুরোহিত।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের হাত থেকে মহিলাদের বাঁচাতে সক্রিয় পুরুষদের দল, ফেসবুকে অকাতরে নম্বর বিলি
এদিকে পাত্রের বাড়ির লোকেরা মদ্য়প অবস্থায় প্যান্ডেলের কেটারিং কর্মীদের সঙ্গে বচসা জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। খাবার নষ্ট করাই শুধু নয়, ভাঙচুর শুরু হয়ে যায় প্যান্ডেলেও। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বাধা দিলে মারধর করা হয় কেটারিং কর্মীদেরও। এমনকী রেয়াত করা হয়নি মেয়ের বাড়ির লোকেদের। পাত্র নিজেও নাকি হবু স্ত্রীর বুকে লাথি মারে! শেষপর্যন্ত পাত্র বীরু দাস যখন বিয়ের আসর থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তখন ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে স্থানীয় বাসিন্দাদের। বরযাত্রীদের পাল্টা মারধর করতে শুরু করেন তাঁরা। পাত্রের সঙ্গে যাঁরা এসেছিল, তাঁদের বেশিরভাগ পালিয়ে যায়। তবে পাত্র-সহ আটজনকে আটকে রাখেন মেয়ের বাড়ির লোকেরা। তাঁদের সাফ কথা, বিয়ে তো দেবেনই না, ক্ষতিপূরণ না পেলে ওই আটজন ছাড়াও পাবেন না। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তাদের আটকে রাখা হয়েছে। তবে সোমবার সকালে পাত্রীর বাড়িতে গিয়ে ক্ষতিপূরণের প্রস্তাবের রাজি হয়েছেন অভিযুক্ত বীরু দাসের পরিবারের লোকেরা।