সাইক্লোন আমফানে প্রমাণ হয়েছিল ম্যানগ্রোভ রক্ষা করে সুন্দরবনকে। কিন্তু তারপরেও হুঁশ নেই সাধারণ মানুষের। মেছোভেড়ি তৈরির জন্য নির্বিচারে ম্যানগ্রোভ কাটা হচ্ছে সুন্দরবনে। এছাড়া, কিছু মানুষ প্রতিদিন জ্বালানির জন্য সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ নিধন করছেন। আর এই নির্বিচারে ম্যানগ্রোভ কাটার কারণেই সুন্দরবনের নদীবাঁধ আলগা হয়ে যাচ্ছে। সামান্য ঝড়বৃষ্টিতেও বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে গ্রামে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বহু মানুষজন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘূর্ণিঝড় আমফানের পর গোটা সুন্দরবন এলাকা জুড়ে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মোতাবেক সুন্দরবনের ১৩টি ব্লক জুড়ে সব এলাকাতেই ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছিল নদীর পাড়ে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে যেখানে যেখানে ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছে সেখানে নদী বাঁধে ভাঙন হয়নি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপটে। ফলে আরও একবার প্রমানিত হল ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের নদীবাঁধের ভাঙন রক্ষা করতে সক্ষম। আর সেই কারণে এবারও গোটা সুন্দরবন এলাকা জুড়ে আরও ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এখনো নিত্যদিন বহু স্বার্থান্বেষী মানুষজন ম্যানগ্রোভ কাটছেন। মেছো ভেড়ি তৈরির জন্যই ম্যানগ্রোভ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি এলাকার বাসিন্দাদের। এর পিছনে শাসক দলের লোকেরা জড়িত বলে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না বলে সূত্রের খবর। তাঁদের দাবি ম্যানগ্রোভ কাটা বন্ধ না হলে আবারও ভাঙবে নদীবাঁধ।
সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হলে ম্যানগ্রোভকে রক্ষা করতে হবে বলে মত স্থানীয় বাসিন্দাদের। ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ বসানো হয়েছে। দুই ২৪ পরগণায় আরও ম্যানগ্রোভ লাগানো হবে বলে মঙ্গলবারই নির্দেশ দেন মমতা। এজন্য ১৫ কোটির প্রজেক্টও ঘোষণা করেন তিনি। এই বিষয়ে তদারকি করতে বনদফর ও পরিবেশ দফতরকে নির্দেশ দেন মমতা। নবান্নে তিনি বলেন প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা জলে যাচ্ছে, কেন বাঁধ তৈরি করা যাচ্ছে না ঠিক মত। প্রতিবছর কেন বাঁধ ভাঙছে, প্রশ্ন তোলেন তিনি।