দাপট তো কিছু কম ছিল না, কিন্তু তাতেও আর লাভ হল কই! এ রাজ্যে গরু পাচারচক্রের কিংপিন মহম্মদ এনামূল ওরফে খুদুকে শেষপর্যন্ত গ্রেফতার করল সিবিআই। এবার কার পালা? আতঙ্কে মুর্শিদাবাদের তাবড় তাবড় নেতা-মন্ত্রীদের ঘুম উড়িয়ে গিয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: জবকার্ড চাইতে গেলে দুই গৃহবধূকে 'বেধড়ক মার' বিজেপি নেতার, তাঁদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ
জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানার নশিপুর পঞ্চায়েতে রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ এনামূলের। খুদু নামেই অবশ্য বেশি পরিচিত সে। বাবা পেশায় পাটের ব্যবসায়ী। ছেলেকে লালগোলা বাজার এলাকার একটি মাদ্রাসা ভর্তি করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লেখাপড়ায় একেবারেই মন ছিল না এনামুলের। সপ্তম শ্রেণির পর্যন্ত পড়ার পর মাদ্রাসা পাঠ চুকিয়ে যায়। জীবিকার সন্ধান শুরু হয়ে যায় কিশোর বেলাতেই। তারপর? কিশোর বয়স থেকে জুয়ার ঠেকে যাতায়াত শুরু হয় এনামূলের। পরবর্তীকালে বিভিন্ন ধরনের মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সে। এর আগে ২০১১ সালে হেরোইন পাচার করতে গিয়ে আসানসোলে কুলটিকে ধরা পড়ে খুদু। কয়েক বছর জেল খাটার পর ফের ফিরে আসে মুর্শিদাবাদে। কিন্তু খুব বেশিদিন থাকতে পারেনি, পুলিশের ভয়ে তাকে উত্তর ২৪ পরগণায় বসিরহাটে আত্মগোপন করতে হয় শোনা যায়। সূ্ত্রের খবর, বসিরহাটে থাকার সময়ে আব্দুল বারীর নামে এক দুষ্কৃতীর সঙ্গে সখ্যতা বাড়ে মহম্মদ এনামূলের এবং গরু পাচার-সহ সীমান্ত লাগোয়া বিভিন্ন কারবারের 'বেতাজ বাদশাহ' হয়ে ওঠে মুর্শিবাদের প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলেটি।
আরও পড়ুন: পুকুরে নিখোঁজ ছাত্রীর দেহ উদ্ধার, কিশোরীর মৃত্যু ঘিরে ঘণীভূত রহস্য
স্থানীয় বাসিন্দদের অভিযোগ, বাম জমানায় রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে যেমন ঘনিষ্ঠতা ছিল, তেমনি পালাবদলের পর তৃণমূলে ভিড়ে যেতেও বেশি সময় নেয়নি মহম্মন এনামূল। দামি গাড়ি ছাড়া চলাফেরা করত না, সঙ্গে সবসময় থাকত সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী! এই নিরাপত্তারক্ষীদের ব্যবহার করতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতেও পিছুপা হত না কুখ্যাত এই গরু পাচারকারী। সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশের সঙ্গে ছিল অবাধ যোগাযোগ। দাপট ছিল এতটাই যে, এক ফোনেই সীমান্তে কর্তব্য়রত বিএসএফ-এর কর্তাদেরও নাকি বদলে করে দিতে পারত গরু পাচারকারী মহম্মদ এনামূল! গরু পাচারকাণ্ডের তদন্তে নেমে সপ্তাহ খানেক আগে দিল্লি থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।