স্বামী-স্ত্রী একযোগে মদ্যপান করে হৈ-হুল্লোড়, পরে তুমুল ঝগড়া। আর তারপরেই স্ত্রীকে লাঠি পেটা করে খুনের অভিযোগ উঠল মদ্যপ স্বামীর বিরুদ্ধে। রাতভর দেহ বাড়িতে পড়ে থাকলেও টের পেলনা কাক-পক্ষীও।
মদ্যপ স্বামীর(Alcoholic husband) হাতে প্রাণ গেল স্ত্রীর। স্বামী-স্ত্রী একযোগে মদ্যপান করে হৈ-হুল্লোড়, পরে তুমুল ঝগড়া। আর তারপরেই স্ত্রীকে লাঠি পেটা করে খুনের অভিযোগ উঠল মদ্যপ স্বামীর বিরুদ্ধে(Charges of murder arose against the drunken husband)। রাতভর দেহ বাড়িতে পড়ে থাকলেও টের পেলনা কাক-পক্ষীও। “দুজনেই মাল খেয়ে ছিলাম নেশার ঘোরে মেরে ফেলেছি বলে” খুনের কথা অকপটে স্বীকার স্বামীর। পুরুলিয়ার এই ঘটনায় হতবাক পুলিশ থেকে শুরু করে এলাকাবাসীরাও। ইতিমধ্যেই স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া থানার শিউলিবাড়ি গ্রামে(Shiulibari village of Nituria police station of Purulia)। পুলিশ সূত্রে জানা যায় মৃতার নাম সীমা মাণ্ডি ওরফে রাসমনি মুর্ম্মু (২৭)। বুধবার মেয়ের দাদা কাশীপুর থানার তালগড়া গ্রামের বাসিন্দা গনেস মুর্ম্মু তার ভগ্নিপতি বাহালাল মাণ্ডির নামে বোনকে হত্যা করার অভিযোগে নিতুরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানা যায়। এরপরই ব্যবস্থা নেয় নিতুড়িয়া থানার পুলিশ(Police of Nituria police station)।
গনেস মুর্ম্মুর অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতার স্বামী বাহালাল মাণ্ডিকে তার বাড়ি থেকে বুধবার রাত্রেই গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহঃষ্পতিবার অভিযুক্তকে রঘুনাথপুর কোর্টে তোলা হয়। পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায় গত ৪ই ডিসেম্বর বিকেলে স্বামী স্ত্রী দুজনেই মদ্যপান করার পর দুজনের মধ্য ব্যাপক ঝগড়া হয়। রাগের বশে লাঠি দিয়ে মারতেই অজ্ঞান হয়ে যায় সীমা। রাত্রে মারা যায় সে। তখনও কেউ টের পায়নি যে সীমা মারা গিয়েছে। এরপরেই বাহালালের বাড়ি থেকে সীমার বাপের বাড়ি তালগড়াতে খবর দেওয়া হয়। জানানো হয় অসুস্থ হয়ে পড়েছে সীমা। তারপরেই দ্রুত ছুটে আসে সীমার বাপের বাড়ির লোকজন। শিউলিবাড়ী গ্রামে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি এলে তারা দেখতে পান ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন তাদের মেয়ে। তারপরই নিতুড়িয়া থানায় সীমাকে হত্যার অভিযোগে বাহালাল মাণ্ডির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এদিকে এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বাহালাল জানায়, “দুজনেই মদ খেয়েছিলাম। বাচ্চাদের খাবার তৈরি করা নিয়ে আমাদের ঝামেলা হয়। তথনই হয় মারপিট।” এদিকে রাগের বশেই যে সে লাঠি দিয়ে তার স্ত্রী সীমাকে মেরে ফেলেছে সে কথাও স্বীকার করে। বাহালাল ও তার বৌ সীমা আলাদা থাকতো। এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি আরও বাহালালের মা শোনমনি মাণ্ডি জানান, “আমরা বাবা মা আলাদা থাকতাম। কিন্তু কাল যে কোথা থেকে কী হয়ে গেল।” এদিকে পেশাগত ভাবে দিনমজুরী করে খায় বাহালাল। তাদের একটি নয় বছরের ছেলে ও ছয় বছরের মেয়ে রয়েছে। মা চলে যাওয়ায় বাচ্চা দুটির ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা বেড়েছে পরিবারের অন্যান্যদের মধ্যে। এদিন বাহালালকে রঘুনাথপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ৭দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেন।