গায়ে কাটা দাগ, মুখে চাপা বালিশ - অভিজাত আবাসনে বৃদ্ধ দম্পতির রহস্যমৃত্যু

পরিচারিকা এসে উদ্ধার করে দুইজনের দেহ। পুরুলিয়া শহরের অভিজাত আবাসনে বৃদ্ধ দম্পতির অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য।
 

Asianet News Bangla | Published : Aug 7, 2021 6:01 PM IST

রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বৃদ্ধ দম্পতির দেহ। শনিবার সকালে পরিচারিকা সে এমনটাই দেখেছিলেন। আর তারপরই ই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এদিন ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল পুরুলিয়া শহরে। শহরের এক অভিজাত আবাসনে কীভাবে ই ঘটনা ঘটল, তাই অবাক করছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। তদন্তে নেমেছে পুলিশ। 

ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়া শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের এক অভিজাত আবাসনে। মৃত দম্পতির নাম - ক্ষিরোদসিন্ধু রায় (৭৬) এবং কৃষ্ণা রায় (৭০)। এদিন সকালে তাদের পরিচারিকা এসে দেখেন ওই ফ্ল্যাটের বাড়ির কোলাপ্সেবল গেট এবং কাঠের দরজা দুটিই খোলা রয়েছে। ভিতরে গিয়ে তিনি দেখেছিলেন - ক্ষিরোদসিন্ধুর মুখে বালিশ চাপা দেওয়া এবং তার পাশে কৃষ্ণা রায়ের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। এরপরই পরিচারিকা ওই বৃদ্ধ দম্পতির মেয়েকে খবর দিয়েছিলেন। সবথেকে আশ্চর্যের ঘটনা হল, পুলিশ জানিয়েছে ওই দম্পতির বাড়ি থেকে কোনও কিছু খোওয়া যায়নি, কিংবা, কোনও কিছুতে হাতও দেওয়া হয়নি।

বৃদ্ধ দম্পতির মেয়ে থাকেন পুরুলিয়া শহরেরই সদরপাড়ায়। সেখানেই তার শ্বশুরবাড়ি। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় প্রতিদিনই সন্ধ্যায় তিনি বাবা-মা'কে দেখতে আসতেন। গত রবিবার, ১ অগাস্টের পর, আবার শুক্রবার ৬ অগাস্ট রাতে তিনি সেখানে এসেছিলেন। মাঝে ভাইরাল জ্বর হওয়ার আসতে পারেননি তিনি। তার দাবি, সন্ধ্যা ৭টা নাগাত বাবা-মায়ের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় দুজন একেবারে স্বাভাবিক ছিলেন। তিনি মনে করছেন এটা হত্যারই ঘটনা। কারণ তার বাবা-মা'এর মধ্যে কোনও বিরোধ ছিল না, বা তাদের কোনও খারাপ লাগা ছিল না, যা থেকে আত্মঘাতি হতে পারেন তারা। তিনি আরও দাবি করেছেন, তার বাবা-মা কিংবা তার নিজের বা তার স্বামীর কোনও শত্রুও নেই। তাই কীভাবে, কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, তা বুঝতে পারছেন না তিনি। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন পুরুলিয়া জেলার পুলিশ সুপার-সহ জেলা পুলিশের অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকেরা। আনা হয় ডগ স্কোয়াডও। গোটা এলাকার সঙ্গে সঙ্গে নিহত দম্পতির বেডরুমও স্নিফার ডগ দিয়ে পরিদর্শন করানো হয়। ফরেন্সিক বিভাগের কর্মীরাও এসে ঘটনাস্থল থেকে প্রয়োজনীয় প্রমাণাদি সংগ্রহ করেছেন। বিকেল ৩টে নাগাদ ওই ফ্ল্যাটবাড়ি খেকে দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনাটি আত্মহত্যা না মৃত্যু সেই বিষয়ে খনই মন্তব্য করতে চাইছে না পুলিশ। তবে মৃত দেহে কিছু কাটা দাগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন এসপি। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না এলে কিছু বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে ওই আবাসনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

এদিকে গোটা ঘটনায় পুরুলিয়া শহরে আবাসনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শহরের আবাসনের বাসিন্দা যারা, তাদের মধ্যে এই ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। 

 

Share this article
click me!