Netaji Birth Anniversary: স্বাধীন দেশ গড়তে এই ট্রানজিট রুট ব্যবহার করতেন নেতাজি

অধিকারী বাড়ির ঘরেই জেলার মহিলা সমিতির প্রসার দেখে খুশি হয়েছিলেন স্বয়ং নেতাজি। সেকথা তিনি চিঠি দিয়ে প্রকাশ্যেও এনেছিলেন। 

Parna Sengupta | Published : Jan 23, 2022 2:18 PM IST

দেশকে পরাধীনতার শৃংখল থেকে মুক্ত করতে তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের সর্বত্র বিচরণ ছিল বাঙালি বীর সন্তান নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhash Chandra Bose))। এমনকি আজকের ইন্দো-বাংলা সীমান্তের মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ট্রানজিট পয়েন্ট (transit point) দিয়ে অনায়াসে ওপার বাংলায় যাতায়াত করতেন তিনি। সেই ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে সংগঠনের স্বার্থে বহুবার এসেছেন তিনি। ঐতিহাসিক প্রামাণ্য নথি বিজড়িত অবহেলায় পড়ে থাকা অধিকারী বাড়ির সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি তুলে সরব হল সব মহল। 

এক সময় এই অধিকারী বাড়ির ঘরেই জেলার মহিলা সমিতির প্রসার দেখে খুশি হয়েছিলেন স্বয়ং নেতাজি। সেকথা তিনি চিঠি দিয়ে প্রকাশ্যেও এনেছিলেন। ফলে এই বাড়িটি জেলার মানুষের কাছে একটি পবিত্র স্থান বলেও দাবি করেছেন অনেকে। এই ব্যাপারে জেলার ইতিহাস গবেষক সমীর ঘোষ বলেন, “জেলায় যে বাড়িকে ঘিরে স্বাধীনতা আন্দোলন আবর্তিত হয়েছে ,যেখানে স্বয়ং নেতাজি একাধিকবার উপস্থিত হয়েছেন, সে বাড়িটি হারিয়ে গেলে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন গবেষক মহল তেমনি জিয়াগঞ্জ হারাবে ঐতিহাসিক নিদর্শন"। 

জানা যায় তখন লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের নির্বাচন, কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন তাজ বাহাদুর সিং দুগার। মূলত তার সমর্থনে বক্তৃতা করতে ১৯২৯ সালে জিয়াগঞ্জে উপস্থিত হয়েছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু । ওই সময় তিনি দলীয় কাজে এলেও সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রেরনা জোগাতে তাজ বাহাদুর হলে তাঁর হাতে জগত সিং লোড়া তুলে দেন শানিত তরবারি। তরবারি পেয়ে নেতাজি বলেছিলেন, “আমি যেন এই তরবারির যোগ্য হয়ে উঠতে পারি।” ওই সময় তিনি উঠেছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতা সুকুমার অধিকারীর বাড়িতে। 

সুকুমার বাবুর দুই কন্যা মণিমালা দেবী ও মৃণালিনী দেবী কংগ্রেস মহিলা সমিতির দায়িত্বে ছিলেন। সুভাষ চন্দ্র বসু মৃণালিনী দেবীকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন । এর পর জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার পর ১৯৩৭ সাল থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যে ফের তিনি জিয়াগঞ্জে আসেন। দলের কাজে তো বটেই সেই সঙ্গে স্বাধীনতার কাজে মানুষকে সংগঠিত করতে স্থানীয় লোড়া পার্কে সভা করেছেন। এখান থেকে ফিরে গিয়ে ১৯৩৯ সালের ৩১ জুলাই মৃণালিনী দেবীকে এক  চিঠি দিয়ে তিনি লিখলেন, “নানা কারনে আমার পক্ষে এখন মুর্শিদাবাদ যাওয়া সম্ভব নয় – এর জন্য আমি দুঃখিত ।মুর্শিদাবাদ জেলার মহিলা সমিতির কাজ প্রসার লাভ করিতেছে জানিয়া আমি সুখী হইয়াছি। নারী সমাজে জাতীয়তার বানী প্রচার করা বিশেষ প্রয়োজন এবং এই কাজের জন্য মহিলা সমিতির ও মহিলা কর্মীর বিশেষ আবশ্যকতা আছে।” 

স্বাধীনতা সংগ্রামী মৃণালিনী দেবী ওরফে মৃণাল দেবীকে ১৯৭২ সালে ভারত সরকার তাম্রপত্র দিয়ে সম্মানীত করেন। নানা দিক থেকে অধিকারী বাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই বাড়ির পূর্ব পুরুষ সূর্য কুমার অধিকারীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বিদ্যাসাগরের তৃতীয় কন্যা বিনোদিনীর। স্বাভাবিক ভাবে স্থানীয় বাসিন্দারা এই বাড়ির সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন।

Share this article
click me!