উর্দি পরেই কৃষিমন্ত্রীকে প্রণাম, বিতর্কে রামপুরহাট থানার পুলিশ অফিসার

  • বীরভূমের রামপুরহাটের ঘটনা
  • কর্তব্যরত অবস্থায় মন্ত্রীকে প্রণাম পুলিশ অফিসারের
  • পুলিশ অফিসারের আচরণের নিন্দায় বিরোধীরা
  • প্রণাম করতে দিইনি, দাবি কৃষিমন্ত্রীর

debamoy ghosh | Published : Feb 16, 2020 12:46 PM IST

কর্তব্য়রত অবস্থায় মন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে বিতর্কে জড়ালেন রামপুরহাট থানার এক পুলিশ অফিসার। সেই ছবি সামনে আসতেই ফের পুলিশের উপর শাসক দলের নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ  পদক্ষেপ নেওয়ারও দাবি উঠেছে। 

রবিবার রামপুরহাট থানায় ছিল রক্তদান শিবিরের অনুষ্ঠান ছিল। একই সঙ্গে পুলিশের তরফে 'সম্মানীয়' নামে একটি প্রকল্প চালু করা হয় এ দিন। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী তথা তৃণমূলের বীরভূম জেলার চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য, রামপুরহাট ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পান্থ দাস। ওই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই রামপুরহাট পুরসভা  এলাকায় 'সম্মানীয়' প্রকল্পের জন্য দু'টি দল গড়ে দেওয়া হয়। একটি দলের নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব পান রামপুরহাট থানার এএসআই রঞ্জন দত্ত।মঞ্চ থেকে তাঁর হাতে প্রকল্পের নিয়মকানুনের কাগজপত্র তুলে দেন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কাগজ হাতে নিয়েই আশিসবাবুকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন রঞ্জনবাবু।

পুলিশ কর্মীর এই আচরণেই বিতর্কের সূত্রপাত। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সঞ্জীব বর্মণ বলেন, 'তৃণমূলের জামানায় সব সম্ভব। এ রাজ্যে আইন তৃণমূলের তৈরি করা। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুশি করতে আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ের কাছে পুলিশ মাথা নত করতে হয়। সংবিধান এদের কাছে তুচ্ছ। পুলিশ এখানে পায়ের নীচে মাথা নত করে বোঝাতে চাইছেন তিনি কতটা বাধ্য। এই পুলিশ নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা করে না। গণতান্ত্রিক রীতিনীতির ক্ষেত্রে এটা ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত। তাছাড়া এ রাজ্যে আইএএস অফিসাররাই তো মুখ্যমন্ত্রীর চটির ফিতে বেঁধে দেন। তৃণমূলের ধর্না মঞ্চে বসেন। আর রঞ্জনবাবু তো একজন নিচুতলার পুলিশ অফিসার।' 

বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, 'ওই পুলিশ অফিসার পোশাক পরে প্রণাম করে বুঝিয়ে দিলেন তিনি আশিসবাবুর অতি বড় শিষ্য। পুলিশের পোশাক পরে চাকরিতে যোগদানের আগে রাজধর্ম পালনের শপথ নিয়েছিলেন। মাথায় সেই অশোকস্তম্ভ লাগিয়ে পায়ের কাছে মাথা নত করে তিনি রাষ্ট্রশক্তিকে অবমাননা করেছেন। আমরা দাবি করব নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করুন। রাজধর্ম পালন করুন। এই ঘটনার নিন্দা করছি।'

কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সঞ্জয় অধিকারী বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে তিনি প্রণাম করতেই পারেন। কিন্তু যখন পোশাক পড়ে থাকবেন তখন তিনি প্রণাম করতে পারেন না। এই ঘটনার বিভাগীয় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।' 

যাঁকে প্রণাম করায় এত বিতর্ক, সেই আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'পুলিশের নিয়মে কী রয়েছে বলতে পারব না। তবে হয়তো উনি আবেগ বশত প্রণাম করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আমি তাকে প্রণাম করতে দিইনি। মন্ত্রী ছাড়াও আমার আরও একটি পরিচয় হলো আমি একজন অধ্যাপক। সেই কারণে অনেক ছাত্রও আমাকে প্রণাম করে।'

জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, 'আমি অনুষ্ঠানে ছিলাম না। ফলে কী হয়েছে জানি না। না জেনে কোনও মন্তব্য করব না।' যদিও এ নিয়ে বার বার ফোন করা হলেও ধরেননি এএসআই রঞ্জন দত্ত।
 

Share this article
click me!