ইতিহাসের ছোঁয়া গৌড়ের পরতে পরতে
এখন ধবংস স্তুপে পরিনত বল্লাল বাটী
পুরাতত্ববিদ বিমল বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঢিপির সন্ধান পান
ইতিহাসের সেই পীঠস্থান থেকে এই প্রতিবেদন
ো
ইতিহাসের ছোঁয়া মালদহ তথা গৌড়ের পরতে পরতে। মসজিদ পর্ব দেখা শেষ হওয়ার পর এবার আমরা সেন বংশের রাজা বল্লাল সেনের বাটি বা ঢিপির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। আঁকাবাঁকা মাটির রাস্তায় দু ধারে আমবাগান কে রেখে গাড়ি নিয়ে এগিয়ে চলা। অবশেষে গাড়ি এসে থামল বল্লাল সেন বাটির সেই ধ্বংস স্তুপের সামনে। একটা দায়সারা পরিচিতি বোর্ড, নেই কোনও প্রহরা অতি সহজেই ঢিপির উপর উঠে পর্যটকদের রীতিমতো ফটো শেসন চলছে।
বাইশগজী দেওয়াল থেকে আমবাগানের মাঝখান দিয়ে বাঁ দিকে মাটির রাস্তা চলে গিয়েছে। বাঁ দিকে কিছু দূর হেঁটে যাওয়ার পর দেখলাম অস্পষ্ট এক বোর্ডে লেখা ‘বল্লালবাটি’। এটা যে মাটি খুঁড়ে পাওয়া গিয়েছে সেটা স্পষ্টই বোঝা যায়। কারণ আমরা উপর থেকে নীচের দিকে দেখছি। নাম শুনে বোঝা যাচ্ছে এটাই হয়তো সেনরাজ বল্লাল সেনের ভবন ছিল।
অন্যান্য জায়গায় কিন্তু নীল বোর্ডে ছোটো করে একটা ইতিহাস লেখা পেয়েছি। কিন্তু এখানে তেমন কিছুই নেই। পুরাতত্ববিদ বিমল বন্দোপাধ্যায় একটি মাটির ঢিবি খুঁড়ে বার করেন এই বল্লালবাটি। এটা আদৌ বল্লাল সেনের তৈরি কিনা সেটা নিয়ে বেশ বড়ো প্রশ্ন। তবে ইতিহাস অনুযায়ী ধরে নেওয়া হয়েছে যে এটি আসলে বল্লাল সেনই বানিয়েছিলেন আর সুলতান বারবক শাহ এটা সংস্করণ করেন বা প্রথম থেকে আবার করে তৈরি করেন।
সামনে দিয়েই বয়ে যেত গঙ্গা। ভেতরে বাগান ছিল, পুকুর ছিল। বাইশগজী পাঁচিল দিয়ে ঘেরা ছিল। প্রাসাদটি গোল ইঁটের স্তম্ভের উপর ছিল। বড়ো বড়ো গোল গোল ইটের স্তম্ভগুলো এখনও আছে। স্থানীয়রা বলল, ওই স্তম্ভের মাঝে যে বড়ো ফুটো, তার মধ্যে বসানো হত শাল কাঠের গুঁড়ি। তার উপর প্রাসাদ। প্রাসাদ আর নেই, স্তম্ভগুলো আছে।
প্রাসাদের অস্তিত্ব আজ বিলীন, স্থানীয় এক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল দেদারে ইঁট চুরি হচ্ছে, প্রশাসনের হুঁশ নেই। আমবাগানের জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে নাকি এই ঢিপির সন্ধান মেলে। মতান্তরে পুরাতত্ত্ব বিদ বিমল বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঢিপির সন্ধান পান।