দিঘার হোটেলঘরে মহিলা নিয়ে তৃণমূল নেতাদের ফূর্তি!, ভাইরাল ছবিতে কাঁপছে ইন্টারনেট

ভাইরাল ভিডিও এবং কিছু ছবিকে নিয়ে এখন চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহ জেলায়। যা এই জেলার রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলেছে। এই ভাইরাল ভিডি এবং ছবির বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন কিছু তৃণমূল নেতা। ঘটনাটি মালদহ জেলার কালিয়াচকের গোলাপগঞ্জে। ফেসবুকে একাধিক পেজ এবং ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে এই ভিডি এবং ছবিগুলো ভাইরাল করা হয়েছে।  

Web Desk - ANB | Published : Jul 15, 2022 11:11 AM IST / Updated: Jul 15 2022, 07:11 PM IST

সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কিছু ছবি এবং ভিডিও নিয়ে এখন তোলপাড় মালদহ জেলা। যার উত্তাপ পৌঁছেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দফতরেও। মালদহ জেলার কালিয়াচকের গোলাপগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকার। ফেসবুকে থাকা কিছু ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট এবং পেজ থেকে কিছু ছবি ও ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে ছবি ও ভিশুয়ালে থাকা লোকেদের উদ্দেশ্য করে তাদের বিরুদ্ধে অনৈতিকতার অভিযোগ করা হয়েছে এই পোস্টগুলি-তে। বেশকিছু ছবিতে আবার ক্যাপশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, ভাইরাল হওয়া এই ছবি ও ভিশুয়ালগুলিতে রয়েছেন গোলাপগঞ্জের পঞ্চায়েত প্রধান জিয়াউল হক। এছাড়াও রয়েছেন তালেপ মিঞা, বকুল মিঞা-সহ আরও কিছু তৃণমূল নেতা। এদের মধ্যে অধিকাংশই গোলাপগঞ্জ পঞ্চায়েতের সদস্য। যদিও, এশিয়ানেট নিউজ বাংলা এই ছবি ও ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এই ছবি ও ভিডিওগুলি যে উত্তেজনার মাত্রা তৈরি করেছে তাকে ঘিরেই এই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। 

 ভাইরাল হওয়া এই ছবিগুলিতে মহিলাদের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের একটা সূত্রের দাবি এই মহিলারা আসলে তৃণমূল নেতাদেরই আত্মীয়-স্বজন। কিন্তু, আত্মীয়-স্বজন বলা হলেও আদপে তাঁরা কেমন আত্মীয় অথবা এমন শারীরিক ঘনিষ্ঠতার কারণ কি তা বলতে পারেন তৃণমূল কংগ্রেসের ওই সূত্র। আবার স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসেরই একটা অংশ এই ভাইরাল ভিডিও ছবির সত্যতা নিশ্চিত করেছে, তাদের অভিযোগ, জিয়াউল হক এবং তাঁর সঙ্গীরা দিনের পর দিন পঞ্চায়েতের উন্নয়নের অর্থ লুঠ করেছেন। জালি জিও ট্যাগ দেখিয়ে অর্থ তচ্ছরূপের অভিযোগও করেছে তারা। তাঁদের আরও অভিযোগ, ওই নয়ছয়ের অর্থেই এইভাবেই কখনও দিঘায়, আবার কখনও পাহাড়ে ভোগ বিলাসে মত্ত হয়েছেন জিয়াউল হকরা। এখন ছবি ভাইরাল হতেই সব গেল গেল রব তুলেছেন, এমনও অভিযোগ করেছেন গোলাপগঞ্জের কিছু তৃণমূল নেতা। 

ভাইরাল হওয়া কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে কখনও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতারা মহিলাদের সঙ্গে নিয়ে সমুদ্রের ধারে বসে হইহুল্লোড় করছেন, কখনও বা ঘরে মহিলার সঙ্গে সঙ্গে নাচ করছেন, কখনও বা আপত্তিজনক অবস্থায় শুয়ে বা বসে রয়েছেন। শুধু ছবি নয় প্রকাশ্যে এসেছে ভিডিও। যেখানে  বন্ধ করে এক ব্যক্তিকে রাতের পোশাক পরা এক মহিলার সঙ্গে হিন্দি গানের সঙ্গে তাল মেলাতেও দেখা গিয়েছে। হাফপ্যান্ট বা বারমুডা পরনে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মহিলাদের ছবিও সামনে এসেছে।  

 এই ঘটনায় সুর চড়িয়েছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি-‌র মণ্ডল সভাপতি শেখর মণ্ডল জানান, ‘‌তৃণমূল দলটাই এই ধরনের কাজে বিশ্বাসী। কাটমানি, দুর্নীতি’‌র সঙ্গে নারীদের নিয়ে কেচ্ছাতেই জড়িয়ে তারা।’‌  তবে এই ঘটনায় স্থানীয়রাও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে।  তবে এই বিষয়ে স্থানীয়রাও এখনও তেমনভাবে কোনও  অভিযোগ জানায়নি। আলোচনা যা হচ্ছে তা সবই সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

স্থানীয় সূত্রে খবর যে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে বিশাল অঙ্কের অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ সামনে এসেছে। গোলাপগঞ্জ পঞ্চায়েতের একাধিক স্থানে রাস্তার হওয়ার কথা বলা হলেও আসলে সেখানে রাস্তা হয়নি বলেই অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসেরই একটা অংশের অভিযোগ, জিও ট্যাগ দেখিয়ে রাস্তা হওয়ার দাবি করেছেন প্রধান জিয়াউল হক এবং তাঁর সঙ্গীরা। কিন্তু, বাস্তবে তেমন কোনও রাস্তার অস্তিত্ব-ই পাওয়া যায়নি। সবমিলিয়ে গোলাপগঞ্জ পঞ্চায়েতে জিয়াউল হকের নেতৃত্বে বিশাল অঙ্কের সরকারি অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জেলা নেতৃত্বের কানেও পৌঁছেছে বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসেরই একটি গোষ্ঠী জিয়াউলদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। কিন্তু, তা সফল হয়নি অভিযোগ, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ভিডিও এবং ছবিগুলো ভাইরাল করা হয়েছে তা তৃণমূল কংগ্রেসরেই অন্য গোষ্ঠীর কাজ। 

ভাইরাল হওয়া ছবিতে থাকা এক তরুণী এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে জানিয়েছেন, জিয়াউল হক সম্পর্কে তাঁর দাদা হন। যে ছবিটি ভাইরাল করা হয়েছে তা অন্তত ৭ থেকে ৮ বছর আগের। ছবিটি গ্যাঙ্কটকে তোলা হয়েছিল। কিন্তু, ভাইরাল হওয়া ছবির জেরে এখন তাঁর পক্ষে বাইরে বেরনো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সম্মানহানির ভয়ে তিনি কোথাও বের হতে পারছেন না। যারা এই কাজ করেছে তাঁদের উপযুক্ত শাস্তিরও দাবি করেছেন ওই তরুণী। 

এদিকে, এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে জিয়াউল হকের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু, কোনওভাবেই তাঁকে পাওয়া যায়নি। জেলা নেতৃত্বও এই বিষয়টিতে মুখ খুলছে না। মালদহ জেলা স্তরের একাধিক তৃণমূল নেতা-নেত্রীকে এই নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কিছুই জানেন না বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। যদিও, বিজেপি নেতৃত্ব গোলাপগঞ্জের ঘটনাকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে গুরুতর কেলেঙ্কারির অভিযোগেই সরব হয়েছে। 

আরও পড়ুন ঃ 

আজ থেকে বিনামূল্যে ৭৫ দিনের বুস্টার ডোজ অভিযান কর্মসূচি , কোভিড রুখতে বড় পদক্ষেপ কেন্দ্রের

বিষমদকাণ্ডে গত ১০ বছরে কতজনের মৃত্যু? অভিযোগ তথ্য নেই রাজ্যের হাতে

ঋষি সুনক-অক্ষতা মূর্তির প্রেম কাহিনি, পার হতে হয়েছিল অনেক কাঁটা বিছান পথ

Share this article
click me!