দৃষ্টি হারিয়েও ছাত্রদের মনে জ্বালাচ্ছেন শিক্ষার আলো, সত্তরোর্ধ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিয়ে সহযোগিতা পুলিশের

  • সত্তরোর্ধ শিক্ষককে সংবর্ধনা দিয়ে সহযোগিতা পুলিশের
  • হারিয়েছেন চোখের দৃষ্টি
  • তারপরও ছাত্রদের মনে জ্বালিয়ে চলেছেন শিক্ষার আলো
  • ছাত্রছাত্রীদের প্রতি ভালবাসার টানেই ছুটে যান বারবার

Indrani Mukherjee | Published : Sep 6, 2019 4:01 AM IST / Updated: Sep 06 2019, 11:14 AM IST

দীপিকা সরকার, দুর্গাপুর-  চোখের তারায় নেই আলো, তাতে কী! ছাত্রদের মনে শিক্ষার আলো জ্বালাতে অদম্য মনের জোড়ে এগিয়ে চলেছেন সত্তরোর্ধ এক শিক্ষক। পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরে কাঁকসা মলানদিঘির বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রবিলাল গড়াই। বারো বছর আগেই কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই বয়সেও নিজের ভাললাগা থেকেই ছাত্রদের পড়াচ্ছেন রবিলাল বাবু। 

কিন্তু অসুবিধার মধ্যে একটাই যে, অবসর গ্রহণের পরই চোখের দৃষ্টি ধীরে ধীরে লোপ পেতে থাকে। একটা সময় পর চোখের দৃষ্টি পুরোপুরিভাবেই হারিয়ে যায় তাঁর। কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতা তিনি জয় করে ফেলেছেন ভালবাসার টানে। চাকরি থেকে অবসর নিয়েও চালিয়ে গিয়েছেন শিক্ষকতা।ছাত্রছাত্রীদের প্রতি তাঁর এই কর্তব্যবোধ-কে সম্মান জানাতেই কাঁকসা থানার পুলিশের তরফে বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবসের দিন তাঁর হাতে তুলে দেন বিশেষ সংবর্ধনা। সেইসঙ্গে বাড়িয়ে দেওয়া হয় সহযোগিতার হাত।

পড়ানোর সঙ্গে ছাত্রদের এঁটো বাসনও মাজেন,শিক্ষক দিবসে শ্রদ্ধা বিশেষভাবে সক্ষম 'প্রবীর স্যার'-কে

এই প্রসঙ্গে স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, রবিলালবাবুর অবসরের পর তিনি এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হয়ে আসেন। তখন থেকেই তিনি দেখছেন যে, প্রতিদিন স্কুলে আসেন রবিলাল বাবু এবং বিনা পারিশ্রমিকেই ছাত্রদের পড়ান। পড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যালয়ের বাগানের গাছগুলিকেও উনি নিজের হাতেই পরিচর্যা করেন। এই বয়সে এসে দৃষ্টি হারিয়েও নিজের কাজের প্রতি তিনি যে এতটাই কর্তব্য পরায়ণ, তার জন্যই তিনি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ হয়ে থাকবেন।

স্থায়ী ভবনের অভাব, তৃণমূল পার্টি অফিস ও পরিত্যক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই চলছে শিশু শিক্ষা

এই প্রসঙ্গে রবিলাল বাবু জানান যে, তিনি গত ২৭ বছর এই স্কুলে শিক্ষকতা করার পর তাঁর ১২ বছরের অবসর জীবনে স্কুলের ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীদের টানে প্রতিদিনই স্কুলে আসেন তিনি। ছাত্রছাত্রীদের পড়ানও। তিনি আরও জানান যে, রোজ সকালে কচিকাঁচাদের হাত ধরে স্কুলে এসে পড়াতে আমার বেশ ভালই লাগে। স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা তাঁকে খুবই শ্রদ্ধা করেন। আর এইভাবেই তিনি তাঁর বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে চান বলেও জানান এই সত্তরোর্ধ শিক্ষক। 

Share this article
click me!