
করোনার(corona virus) গ্রাসে প্রায় দেড বছরের বেশি সময় ধরে স্তব্ধ ছিল জনজীবন। বর্তমানে টিকাকরণে গতি ও সংক্রমণে পারাপতনের জেরে গত কয়েকমাস ধরেই ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছে পরিস্থিতি। ফের ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে জীবন। কোভিড সংক্রমণের জেরে বর্ধমানেও(bardhaman) সব ধরণের সাংস্কৃতিক(cultural) কর্মকান্ডই প্রায় বন্ধ ছিল। রাজ্যের অন্যান্য অংশের পাশাপাশি এই জেলার অবস্থা বদল হলে ধীর ধীরে পচাত্তর শতাংশ দর্শক নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলি শুরু হয়েছে। ফের মঞ্চ সেজে উঠছে অভিনেতাদের জাদুতে।
এমতাবস্থায় দীর্ঘদিন পর গোটা জেলার একমাত্র সক্রিয় আধুনিক পুতুল নাচের (Bengali Puppet Dance) দল দি পাপেটিয়ার্স তাদের নতুন নাচের পালার প্রিমিয়ার করল শহরের বুকে। সোমবার বৃষ্টিবিঘ্নিত সন্ধ্যাতেও শহরের সাংস্কৃতিক জগতের মানুষেরা এই উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে একত্রিত হন। কার্যত বসে যেন চাঁদের হাট। এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল বর্ধমান টাউনহলে। গোটা অনুষ্ঠানে একাধিক কর্মসূচির মধ্যে ছিল ছোটদের জন্য ছিল ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা। তবে আসল আকর্ষণ ছিল পুতুল নাচ।
আরও পড়ুন - চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ সিঙ্গুর, নবান্ন অভিযানের শুরুতেই পুলিশি বাধা
এদিন নতুন শো ' নীলবর্ণ শেয়াল'-এর প্রিমিয়ার হয় টাউনহলেই(townhall)। এই গল্পে পুরনো কথামালার আঙ্গিক ধরে রেখেই তা আধুনিক ফর্মে সাজিয়েছেন সৌম্য দে। এর নাট্যাংশ পরিচালনা করেছেন অমিতাভ চন্দ্র। সমগ্র পুতুলনাটক টি পরিচালনা করেছেন পার্থপ্রতিম পাল। সঙ্গীত আয়োজনে অনুপম রায় ও পলাশ দাস। বর্তমানে গোটা বাংলা থেকেই যেন মুছে যেতে বসেছে পুতুল নাচের আসর। একসময় টিভি-ইন্টারনেট যুগের আগে বাংলার বুকে সন্ধ্যার আসর জমিয়ে বেড়াতে এই পুতুল নাচই। অনুষ্ঠান দেখতে ভীড় করতেন আট থেকে আশি সকলেই। আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক থেকে শুরু করে সমাজের ভিন্ন শ্রেণির, ভিন্ন বিভাগের সব ধরণের গল্পই দেখা যেত পুতুল নাচের আসরে। কিন্তু কালের নিয়মে সেসবই এখন স্মৃতির পাতায়।
আরও পড়ুন - প্রচার ঘিরে উত্তেজনা, থানা থেকে চ্যাংদোলা করে বার করে দেওয়া হল তৃণমূল প্রার্থীকে
তবে পরিচালক পার্থপ্রতিম পালের মতে পুতুল নাচ নিয়ে এখনও মানুষেক মনে যথেষ্টই আগ্রহ রয়েছে। শো হয় না বলে দেখার সুযোগ পাননি অনেক মানুষই। যদিও এখনও রাজ্যে রাজ্যের কিছু কিছু জেলায় প্রায়শই পুতুল নাচের আয়োজন করা হয়। তবে কথক, ইন্সট্রাকটার সহ পুতুল নাচের সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের আয়ের বিশেষ সংস্থান না হওয়ায় তারা বর্তমানে অন্যান্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। আর এখানেই ঘনাচ্ছে বিপদ। ফলস্বরূপ আয়ও কমছে নাট্যসংস্থাগুলির। যদিও নাট্যকর্মীদেকর একাংশের মতে আগামীতে অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে নতুন ছন্দে দেখা যেতে পারে বাংলার পুতুল নাচকে।