Firhad on Manhole: 'শৌচকর্মের জন্য বস্তির বাসিন্দারাই ম্যানহোল খুলে রাখেন', দাবি ফিরহাদের

স্থানীয় বস্তির বাসিন্দারাই শৌচকর্মের জন্য ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। রবিবার মালদহের চাঁচলের কলিগ্রামে নতুন দুটি বাসের উদ্বোধন করতে এসে একথা বলেন তিনি। 
 

Asianet News Bangla | Published : Nov 14, 2021 1:23 PM IST

শনিবার এক অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছে শহর কলকাতা (Kolkata)। খোলা ম্যানহোলের (Manhole) মধ্যে পড়ে মৃত্যু (Death) হয়েছে দমদমের বেদিয়াপাড়ার বাসিন্দা, পেশায় অটোচালক রঞ্জন সাহার (Ranjan Saha)। কলকাতা পৌরনিগম (Kolkata Municipal Corporation) ও দমদম পৌরসভার (Dumdum Municipality) উদাসীনতা ও গাফিলতির জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ মৃতের পরিবারের। যদিও স্থানীয় বস্তির (Slum) বাসিন্দারাই শৌচকর্মের জন্য ম্যানহোলের ঢাকনা (Manhole cover) খুলে রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। রবিবার মালদহের চাঁচলের কলিগ্রামে নতুন দুটি বাসের উদ্বোধন করতে এসে একথা বলেন তিনি। 

দমদমের ওই ঘটনা প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, "কলকাতায় আমাদের সব ম্যানহোলেই ঢাকা রয়েছে। এই ম্যানহোলেরও ঢাকনা রাখা ছিল। কিন্তু, সেটাকে পাশেই তুলে রাখা হয়। ওই এলাকায় থাকা একটি বস্তির কিছু মানুষ সেখানে বাচ্চাদের শৌচকর্ম করান। তাই তাঁরাই ম্যানহোলের ঢাকনাটা তুলে রেখে দেন। এটা আমি জানতাম না। তা জানলে ওই বস্তিতে দু-তিনটে শৌচালয় বানিয়ে দিতাম। কিন্তু, দুর্ভাগ্য যে এটা আমার নজরে আসেনি। এর আগে আমাকে কেউ একথা বলেওনি। ওই বস্তিতে যাতে শৌচালয় বানিয়ে দেওয়া যায় তার জন্য আমরা ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বলেছি। শৌচালয় তৈরির জন্য আমাকে সেখানে কিছু জায়গা চিহ্নিত করে দিক আমি শৌচালয় তৈরি করে দেব। কিন্তু, ম্যানহোল তুলে শৌচকর্ম করাটা খুবই লজ্জার বিষয়।"

আরও পড়ুন- সন্তানদের পড়াশোনার জন্য ভাড়ায় অটো নিয়েছিলেন, একমাত্র রোজগেরের মৃত্যুতে অসহায় পরিবার

উল্লেখ্য, সন্তানদের পড়াশোনার খরচ ও পরিবার চালানোর জন্য ভাড়ায় একটি অটো নিয়েছিলেন রঞ্জন। ৩০-এ বাস স্ট্যান্ড থেকে সিঁথির মোড় রুটের অটো চালাতেন। প্রায় ১৫ বছর ধরে অটো চালাচ্ছেন তিনি। প্রতিদিন রাতে মালিকের বাড়ির সামনে অটো রেখে হেঁটে বাড়ি ফিরতেন। শুক্রবার রাতেও তার অন্যথা হয়নি। ওইদিন রাতেও প্রতিদিনের মতোই পুরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের সেভেন ট্যাঙ্কের কাছে মালিকের বাড়ির সামনে অটো রেখে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু, সেখানেই যে তাঁর জন্য মরণফাঁদ পাতা রয়েছে তা ঠাহর করতে পারেননি। খোলা ছিল একটি ম্যানহোলের ঢাকনা। আর তাতেই পা ফসকে পড়ে যান। এরপর স্থানীয়রাই তাঁকে তুলে নিয়ে আরজি করে যান। অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু, শনিবার ভোররাতে হাসপাতালেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন- ম্যানহোল যেন মরণফাঁদ, চোরাই মার্কেটে কেন চাহিদা বাড়ছে ম্যানহোলের ঢাকনার

কিন্তু, এক ব্যক্তির ৪ ফুট গভীর একটা ম্যানহোলে পড়ে কীভাবে মৃত্যু হল তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, "৪ ফুট গভীর একটা ম্যানহোলে পড়ে গিয়ে কারও মৃত্যু হয় এটা আমাদের ধারণা ছিল না। ওই ব্যক্তির কোনও অসুস্থতা ছিল কিনা তা দেখার জন্য আমরা পুলিশকে বলেছি। মৃত্যু নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করি।" এর পাশাপাশি শহরে অন্য কোনও ম্যানহোল খোলা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। 

আরও পড়ুন - খোলা ম্যানহোলে পড়ে প্রাণ গেল অটোচালকের, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ ফিরহাদের

এদিকে পরিবারের একমাত্র রোজগেরে মানুষের এভাবে মৃত্যু হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না রঞ্জন সাহার পরিবারের সদস্যরা। কীভাবে সংসার চলবে, কীভাবে দুই ছেলের পড়াশোনার খরচ জোগাবেন তা ভেবেই কূল পাচ্ছেন না স্ত্রী সোমা সাহা। 

Share this article
click me!