শনিবার ৪৬ নম্বর আসাম রাইফেলসের কনভয়ের ওপর মায়ানমার সীমান্তবর্তী জেলায় জঙ্গি হানা হয়। জঙ্গিদের গুলিতে অসম রাইফেলসের দুই কর্মী ও গাড়ির চালক শ্যামলের মৃত্যু হয়।
মায়ানমার সীমান্তে (Myanmar border) জঙ্গি হানায় শহিদ (martyred) মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বাঙালি জওয়ান (Bengali soldier)। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবিতে পরিবার (Family)। টেলিফোনের মাধ্যমে খবর এসে পৌঁছাতেই মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার অন্তর্গত কীর্তিপুর গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জঙ্গি হানায় শহিদ জওয়ান শ্যামল দাসের পরিবার ও প্রতিবেশীরা কার্যত শোকস্তব্ধ। সকলেই অপেক্ষা করছেন কফিনবন্দি হয়ে আসাম রাইফেলসের বাঙালি জওয়ানের দেহ তার গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসার জন্য।
শনিবার ৪৬ নম্বর আসাম রাইফেলসের কনভয়ের ওপর মায়ানমার সীমান্তবর্তী জেলায় জঙ্গি হানা হয়। অসম রাইফেলসের এক কমান্ডিং অফিসার-সহ ৬ জন শহিদ হন। সপরিবার কম্যান্ডিং অফিসার বিপ্লব ছাড়াও জঙ্গিদের গুলিতে অসম রাইফেলসের দুই কর্মী ও বিপ্লবের গাড়ির চালক শ্যামলের মৃত্যু হয় ওই ঘটনায়। মণিপুরের ঐ জঙ্গি হামলার সময় শ্যামল ছিলেন কমান্ডিং অফিসার বিপ্লব ত্রিপাঠীর গাড়িতে। প্রথমে বিপ্লব জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন। পরে গাড়িতে থাকা বিপ্লবের স্ত্রী ও সন্তানকেও গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা।
শ্যামল ছিলেন ওই গাড়ির চালকের আসনে। জঙ্গিরা তাকেও করে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। শ্যামল দাসের পরিবারে বাবা, মা, স্ত্রী ও ৮ বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এমনকি দিন কয়েক আগে মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে তার সঙ্গে টেলিফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে শ্যামলের। এদিকে এই ঘটনার পর পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছেলের এমন ভাবে মৃত্যুতে অথৈ জলে পড়ে গিয়েছে গোটা পরিবার। প্রায় ১২ বছর আগে ২০০৯ সালে অসম রাইফেল যোগদান করেছিল বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছেলে শ্যামল।
এদিন তাঁর বাবা ধীরেন দাস জানান ওই শহিদ জওয়ানের রোজগারেই সংসার চলত। এমনকি এর আগে শ্যামলের ছোট ভাইয়ের ও মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে অন্য একটি ঘটনায়। শ্যামলের স্ত্রী সুপর্ণা দাস বলেন, শনিবার সকালেও ওর সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। আর আমাকে কেউ ফোন করবে না। সকালে ফোন করে জানাল আমরা ফিরছি। সে আর ফিরে আসবে না।'' বলতে বলতেই জ্ঞান হারান সুপর্ণা। আট বছরের কন্যা রিয়া মা-কে ও ঠাকুমাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছে। বুঝতে পারছে, ফিরে আসবে না বাবা।
Narendra Modi-কথা রাখলেন মোদী, টাকা ঢুকল লক্ষাধিক মানুষের অ্যাকাউন্টে
Rahul Gandhi-হিন্দুত্ব মানেই শিখ-মুসলিমকে পেটানো, বিজেপিকে কটাক্ষ রাহুল গান্ধীর
Climate Summit-জলবায়ু চুক্তির বিরোধিতায় ২১টি দেশ, কোন প্রশ্নে এককাট্টা ভারত-চিন
দুর্গাপুজোর আগে বাড়ি এসেছিলেন শ্যামল। পঞ্চমীর দিন ফিরে যান কর্মস্থলে। নবান্ন উৎসবে আসবে বলেছিল সে। জানা গেছে, এদিন কলকাতায় পৌঁছবে নিহত জওয়ানের দেহ। এরপর সড়ক পথে তাঁর দেহ নিয়ে আসা হবে পৈতৃক গ্রামে। সেখানেই পূর্ণ মর্যাদায় আজ তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। নিহত জওয়ান এলাকায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। ছুটি এলে সবার সঙ্গেই মেলামেশা করতেন। এ জন্য শোকস্তব্ধ এলাকার মানুষ খবর পাওয়ার পরই তাঁর বাড়িতে এসে পৌঁছেছেন।
প্রাণচঞ্চল এই মানুষটি আর নেই, তা যেন তাঁরা বিশ্বাসই করতে পারছেন না। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে স্থানীয়রা এসে পৌঁছেছেন। শহিদ জওয়ানের বাব ধীরেন দাস বলেন,"আমার সংসারটা পুরোপুরি ভেসে গেল। এখন এই নাতনিকে নিয়েই বাকি জীবনটা অবলম্বন করে কাটাতে হবে। তবে যে জঙ্গিরা এই নক্কার জনক ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো ভারতীয় জওয়ানের মা বাবার কোল ফাঁকা না হয়"।