তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন কি উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ, প্রশ্ন ঘিরে জোর জল্পনা জেলায়। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকে মমতার অনুরোধ রক্ষাও করতেই খগেন মুর্মুকে ঘিরে জোর জল্পনা।
মালদহ-তনুজ জৈনঃ- তৃণমূলে (TMC) যোগ দিচ্ছেন কি উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ (BJP MP), প্রশ্ন ঘিরে জোর জল্পনা জেলায়। উল্লেখ্য, অতি সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) উত্তরবঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর তাঁর প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিতি থাকার অনুরোধ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই অনুরোধ রক্ষাও করেন খগেন মুর্মু। স্বভাবতই তারপর থেকেই জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে এই নিয়ে জল্পনা।
জেলা রাজনৈতিক মহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে গুঞ্জন। ইতিমধ্যে এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় 'উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু তৃণমূলে যোগদান দিতে চলেছেন' পোস্ট দেখা গেছে। যা নিয়ে শোরগোল পড়েছে জেলা-জুড়ে। পাশাপাশি তৃণমূলের একাংশের দাবি উত্তর মালদা বিজেপি সাংসদ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন। যদিও সাংসদ এই সমস্ত জল্পনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। জল্পনা শুরু হয়েছে উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু কে নিয়ে। মালদহ জেলা রাজনীতিতে এই মুহূর্তে যে বিষয় নিয়ে সব থেকে বেশি চর্চা হচ্ছে তা হলো খগেন মুর্মুর দলবদলের জল্পনা।
আরও পড়ুন, বাংলার নির্বাচন আদৌ কি হিংসা মুক্ত, কাউন্সিলর হত্যাকাণ্ডে মমতার সরকারকে তোপ বিরোধীদের
এমনকি ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই নিয়ে পোস্ট দেখা গেছে। জেলার আনাচে-কানাচে একটাই গুঞ্জন, কবে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন বিজেপি সাংসদ, আর এই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়তেই চিন্তার ভাঁজ গেরুয়া শিবিরে। চিন্তিত বিজেপির কর্মী-সমর্থকরাও। বিশেষ করে তৃণমূল নেতা এই দাবি করার পর থেকে আরও তীব্র হয়েছে জল্পনা। এমনিতেই বাংলার রাজনীতিতে দলবদল যেন একটা ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। কলকাতার ফুটবল ময়দানে দল বদলের মত বাংলার রাজনীতিতে বর্তমানে দলবদল হচ্ছে। বিধানসভা ভোট পরবর্তী সময়ে বিজেপি থেকে একাধিক নেতা, বিধায়ক গেছেন শাসকদলে। তবে গেরুয়া শিবিরের কোন সাংসদ এখনও তৃণমূলে যান নি। যদিও বিভিন্ন সময় জল্পনা অনেককে নিয়ে চলছে । তবে কি সাংসদদের মধ্যে প্রথম খগেন মুর্মু যোগ দিচ্ছেন শাসকদলে, কিন্তু যাকে নিয়ে এত জল্পনা তিনি সমস্ত জল্পনাকে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
সাংসদ খগেন মুর্মুর দাবি, রাজ্যের তৃণমূল ক্ষমতায় আসার সময় ২০১১ সাল থেকেই আমাকে নিয়ে এই ধরনের কথা চলছে।তৃণমূল বিরোধীশূন্য করতে চায় রাজ্যকে। সাংসদ খগেন মুর্ম বিজেপিতে ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন, বিজেপিকে বিভ্রান্ত করার জন্য তৃণমূলের এগুলো অপপ্রচার। অন্যদিকে তৃণমূল নেতা সঞ্জীব গুপ্তার দাবি উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন। কারণ উনি বুঝতে পারছেন বিজেপির পায়ের তলার মাটি নেই।পৌরসভা নির্বাচনে বিজেপির আসন নির্দলের থেকেও নিচে নেমে গেছে। তাই বিজেপির বহু নেতা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এমনকি তিনি দাবি করছেন হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাতে বিজেপি বলে কিছু থাকবে না। যা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
আরও পড়ুন, সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার, বৃষ্টি নিয়ে কী বলছে হাওয়া অফিস
তৃণমূল নেতা সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য যোগাযোগ করেছেন। কারণ উনি বুঝতে পারছেন বিজেপির পায়ের তলার মাটি নেই। পৌরসভা নির্বাচনে বিজেপির আসন নির্দলের থেকেও নিচে নেমে গেছে। তাই বিজেপির বহু নেতা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। বড় বড় নেতা থেকে শুরু করে অঞ্চল পর্যন্ত। আমাদের উচ্চ নেতৃত্ব এই নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছে। আগামীতে বিজেপি বলে কিছু থাকবে না এই রাজ্যে।উত্তর মালদা সাংসদ খগেন মুর্মু পাল্টা সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে বলেন বলেন, 'রাজ্যের তৃণমূল ক্ষমতায় আসার সময় ২০১১ সাল থেকেই আমাকে নিয়ে এই ধরনের কথা চলছে। আমি নাকি তৃণমূলে যাচ্ছি। সমস্ত টাই ওদের অপপ্রচার। ওরাও জানে আমি কোনদিন যাব না। দলকে বিভ্রান্ত করার জন্য এসব করছে। আর সত্যি তৃণমূল তো বিরোধী-শূন্য করতে চায়। কারণ ওরা গণতন্ত্র মানে না। তবে আমি বিজেপিতে ছিলাম আছি এবং থাকব।'
উল্লেখ্য, খগেন মুর্মুর রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে দীর্ঘদিন বামপন্থী রাজনীতি করতেন। দীর্ঘদিন সিপিএম বিধায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগদান করেন।বিজেপির টিকিটে উত্তর মালদাহ লোকসভা কেন্দ্রে লড়াই করেন এবং জয়লাভ করেন। ফের একবার খগেন মুর্মু কে নিয়ে দলবদলের জল্পনা শুরু হয়েছে জেলা রাজনীতিতে। যদিও তিনি এই জল্পনাকে পাত্তা দিচ্ছেন না।