নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন শুভেন্দু। প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে মমতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে দেখা গিয়েছিলেন তাঁকে। কিন্তু, এখন আর তিনি তৃণমূলে নেই।
এ রাজ্যে জমি আন্দোলনের (Land movement) আঁতুড়ঘর ছিল নন্দীগ্রাম (Nandigram)। আর সেই আন্দোলনকে হাতিয়ার করেই নন্দীগ্রামের নাম জেনেছিল গোটা দেশ। এমনকী, ওই আন্দোলনের জেরে ইতিহাসের পাতায়ও জায়গা করে নিয়েছে এই স্থান। গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন (Farm Law) বাতিলের খুশিতে সেই এলাকাতেও খুশির মিছিল হয়েছে। সকালে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরে নন্দীগ্রামের কেন্দামারিতে চৌরঙ্গী বাজার এলাকায় তৃণমূলের মিছিল বেরোয়। সেই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি আবু তাহের। এদিকে অদ্ভুতভাবে এই ঘোষণার পর চুপ থাকতে দেখা গেল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari)।
নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন শুভেন্দু। প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে মমতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে দেখা গিয়েছিলেন তাঁকে। কিন্তু, এখন আর তিনি তৃণমূলে (TMC) নেই। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election) আগেই যোগ দেন বিজেপিতে। এদিকে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর তিনটি কৃষি আইন বাতিলের কথা ঘোষণার পরও চুপ থাকলেন শুভেন্দু। তা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি তিনি। নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু ভগবানপুরে দলীয় কর্মীর স্মরণসভায় গিয়েছিলেন। তবে কৃষি আইন বাতিল নিয়ে সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি কিছুই বলতে চাননি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে নমস্কার জানিয়ে চলে যান তিনি। নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার পরও কৃষকদের এই জয়ে কেন তিনি কোনও মন্তব্য করলেন না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মনে।
আরও পড়ুন- টেবিলে গোছানো রয়েছে ব্যাগ, ব্যাঙ্গালুরু যাওয়ার আগে উদ্ধার মেডিক্যাল পড়ুয়ার দেহ
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরই নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি আবু তাহেরের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয় সেখানে। কৃষি আইন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে আবু তাহের বলেন, "জনগণের আন্দোলন যে স্বৈরাচারী শক্তিকে হারিয়ে দিতে পারে, তার সাক্ষী থাকল এই কৃষক আন্দোলন। আগামী দিনে যেখানে কৃষকের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হবে নন্দীগ্রামের মানুষ পাশে দাঁড়াবে।"
আরও পড়ুন- শৌচাগারে চিকিৎসকের দেহ, মৃত্যুঘিরে ক্রমশই দানা বাঁধছে রহস্য
প্রসঙ্গত, তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে আন্দোলন শুরু করেন কৃষকরা। প্রথম দিনেই দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার আম্বালায় পুলিশের বাধা মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁদের। প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছিল জাতীয় রাজনীতি। তবে দীর্ঘ রাজনৈতিক তরজা, বিতর্ক ও আন্দোলনে ইতি টানতে শুক্রবার গুরুনানক জয়ন্তীর দিন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করবে কেন্দ্র সরকার। কৃষকদের বোঝাতে না পেরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর সরকার। যদিও প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর উচ্ছ্বসিত বিরোধীরা। আর এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করে নীরব থাকলেন শুভেন্দু।
আরও পড়ুন- সপ্তাহান্তে বাড়ল শহরের তাপমাত্রা, বৃষ্টির সম্ভাবনা কলকাতায়