সূত্রের খবর, শুভেন্দু অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগে থেকেই প্রশ্নের তালিকা তৈরি করে রেখেছেন সিআইডি আধিকারিকরা। সেই মতো আজ সকালেই ভবানীভবনে পৌঁছে গিয়েছিল সিআইডির বিশেষ তদন্তকারী দল।
কথা ছিল আজ সকাল ১১টার সময় ভবানীভবনে হাজিরা দেবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রাক্তন দেহরক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তীর রহস্যমৃত্যু মামলায় তাঁকে তলব করেছিল সিআইডি। যদিও আজ হাজিরা দিচ্ছেন না শুভেন্দু। জানা গিয়েছে, হাজিরা দিতে না পারার কথা ইমেলের মাধ্যমে সিআইডি আধিকারিকদের জানিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, দিনভর রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে। তার জন্য ব্যস্ত থাকবেন তিনি। তাই আজ হাজিরা দিতে পারবেন না। এর ফলে সিআইডি ফের তাঁকে চিঠি পাঠিয়ে তলব করতে পারে বলে সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর, শুভেন্দু অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আগে থেকেই প্রশ্নের তালিকা তৈরি করে রেখেছেন সিআইডি আধিকারিকরা। সেই মতো আজ সকালেই ভবানীভবনে পৌঁছে গিয়েছিল সিআইডির বিশেষ তদন্তকারী দল। তবে ১০টা নাগাদ ইমেল পাঠিয়ে আজ হাজিরা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন শুভেন্দু।
আরও পড়ুন- 'তথ্য প্রমাণ সহ গ্রেপ্তার করাবো', গরু পাচার ইস্যুতে TMC-কে হুমকি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর
প্রায় ৬ থেকে ৭ বছর শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করেছেন শুভব্রত। শুভেন্দুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকার ফলে কাঁথিতে থাকতেন তিনি। ১৩ অক্টোবর ২০১৮ সাল। প্রতিদিনের মতো সকাল ১০টার সময় স্ত্রী সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তীকে ফোন করেছিলেন শুভব্রত। জানিয়েছিলেন ওইদিন বাড়িতে ফিরবেন তিনি। এরপর স্বামীর সঙ্গে কথা বলে স্কুলে বেরিয়ে পড়েন সুপর্ণা। বেলার দিকে স্কুলের কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ ১১টা ২০ নাগাদ তাঁকে ফোন করেন তাঁর জা। দ্রুত সুপর্ণাকে বাড়ি ফিরতে বলেন। এরপর তড়িঘড়ি বাড়ি ফিরে তিনি জানতে পারেন শুভব্রতকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কী কারণে তিনি হাসপাতালে ভর্তি তা অবশ্য জানতে পারেননি।
খবর পেয়েই দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছান শুভব্রতর দুই দাদা এবং অন্য আত্মীয়রা। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন শুভব্রতকে গুলি করা হয়েছে। অভিযোগ, সেখানে শুভব্রতর কোনও চিকিৎসা হয়নি। গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছিল। এদিকে শুভব্রতর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করতে বলেন। কিন্তু, কাঁথি থেকে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনও অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাচ্ছিল না। অ্যাম্বুলেন্স পেতে এতটাই দেরি হয়ে গিয়েছিল যে আর স্বামীকে বাঁচাতে পারেননি সুপর্ণা। কলকাতায় যাওয়ার আগেই শুভব্রতর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন- ফের দৈনিক সংক্রমণ পেরোল ৭০০-র গণ্ডী, শীর্ষে কলকাতা
এই ঘটনার প্রায় তিন বছর পর স্বামীর মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করতে থানা অভিযোগ দায়ের করেন সুপর্ণা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ১২ জুলাই এই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিআইডি। ওইদিনই মহিষাদলের সরবেড়িয়া গ্রামে সুপর্ণার বাড়িতে আসে সিআইডির একটি প্রতিনিধি দল। শুরু হয় খুনের মামলার তদন্ত। ১৮ জুলাই কাঁথি থানায় যান সিআইডি আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলেও ঘুরে দেখেছিলেন তাঁরা। তারপরই এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয় শুভেন্দুকে।