উত্তর ২৪ পরগনার থেকে আগত নাজমা খাতুন পেশায় যৌনকর্মী। এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায় অতীতেও তার দুটি ছেলেকে, নাবালক অবস্থায় মুম্বই-দিল্লিতে কাজে পাঠিয়েছেন রোজগারের উদ্দেশ্যে, বাকি দুজনকেও অর্থের বিনিময়ে নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।
কথায় বলে কুসন্তান যদি বা হয়, কুমাতা কদাপি নয়। কিন্তু এদিনের ঘটনা অন্য কিছুই প্রমাণ করছে। মা হয়ে নিজের সন্তানকে ফেলে রেখে যাওয়া কার্যত অসম্ভব। তবে সেরকম কান্ডই ঘটালেন এক মা। নিজের তিন দিনের শিশু কন্যাকে ফেলে রেখে গেলেন তিনি। তাও আবার একটা বন্ধ ঘরে। তিন দিনের ছোট্ট এক রত্তি ফুটফুটে দুধের শিশু। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কেঁদে চলেছে। অথচ হাই স্পীড ফ্যানের আওয়াজ, পাশাপাশি ঘরে নানান কোলাহলে তা খেয়াল করেননি কেউ। ঘরের দরজায় বাইরে থেকে তালা বন্ধ প্রায় ১০ ঘন্টা ধরে। চরম অমানবিক নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিপুরের যৌনপল্লীতে। এক যৌনকর্মীর সন্তানকে উদ্ধার করা হল প্রায় মরণাপন্ন অবস্থায়। তিন দিনের ওই শিশুকে দেখে চোখে জল অন্যান্য যৌনকর্মীদের।
উত্তর ২৪ পরগনার থেকে আগত নাজমা খাতুন পেশায় যৌনকর্মী। এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায় অতীতেও তার দুটি ছেলেকে, নাবালক অবস্থায় মুম্বই-দিল্লিতে কাজে পাঠিয়েছেন রোজগারের উদ্দেশ্যে, বাকি দুই সন্তানকেও অর্থের বিনিময়ে নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। বিক্রির বিষয়টি উহ্য থাকলেও আইন অনুযায়ী কোর্টের মাধ্যমে লিখিত করেছিলেন অপর দুই নাবালকের ক্ষেত্রে। অর্থাৎ আইন অনুযায়ী সব ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন ওই মা।
এবারে পঞ্চম সন্তান হিসাবে সদ্যোজাত শিশু কন্যা রেখে, ঘর তালা বন্ধ করে পালিয়ে যান যৌনকর্মী নাজমা বলে অভিযোগ। পালিয়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়াকেই মনে করছেন প্রতিবেশীরা। সন্তান জন্ম নেওয়ার একদিন আগে পর্যন্ত পেশা অনুযায়ী যৌনকর্ম চালিয়ে গেছেন বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রতিবেশী যৌনকর্মীরাই নবজাতককে উদ্ধার করে, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান মেডিকেল চেকআপের জন্য। এরপর ওই শিশুর মায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে, প্রাথমিক ভাবে চলে আসার কথা জানান নাজমা। তবে পরে মোবাইল সুইচ অফ করে দেন। পরে আর তাঁর সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।
এদিকে, যৌনকর্মীরা শান্তিপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর নদিয়া জেলা চাইল্ড লাইন রাত দুটো নাগাদ উদ্ধার করে নিয়ে যায় ঐ শিশুটিকে। চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধি জানান, রানাঘাটে রেখে প্রতিপালন করা হবে ও শিশুটিকে। এরই সঙ্গে তার মায়ের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।