বিশেষ মিষ্টিতে দেবীকে বরণ, সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো বড়মণ্ডল বাড়ির দুর্গোৎসব

  • সাড়ে তিনশোর বছরেরও বেশি পুরনো
  • বড়মণ্ডল পরিবারের পুজোর জৌলুস কমেনি এতটুকু
  • রীতি মেনে বিশেষ লাডডু দেওয়া হয় দেবীকে
  • পুজোর চারদিন কোলাহলে ভরে ওঠে জমিদারবাড়ি 

Asianet News Bangla | Published : Oct 14, 2020 4:54 PM IST

এখন আর কিছু নেই, তবে এককালে ছিল। প্রায় সাড়ে তিনশোর বছরের ইতিহাসের সাক্ষী বাঁকুড়া বিষ্ণুপুরের ভড়া গ্রামের বড়মণ্ডর পরিবারের দুর্গাপুজো। প্রাচীন রীতি মেনে আজও জমিদার বাড়ির পুজোয় দেবীকে নিবেদন করা হয় ভ্যাটের লাডডু। হারিয়ে যায়নি জৌলুস, ঐতিহ্য ও আভিজাত্যও। 

আরও পড়ুন:ঠাকুর দালানে ভোগের নামে পৌঁছত বিপ্লবীদের জন্য খাবার, চন্দননগরের হরিহর শেঠের বাড়ির দুর্গাপুজো আজও উল্লেখযোগ্য

সাড়ে তিনশো বছর! সে বড় কম সময় নয়। বিষ্ণুপুরের ভড়া গ্রাম তখন ছিল ঘন জঙ্গলের ভরা। 'ভড়' নামে জনজাতির মানুষেরা বসবাস করতেন গ্রামে। কথিত আছে, মল্লরাজারে নির্দেশ কোতুলপুরের লাউগ্রাম থেকে ভড় গ্রামে আসেন লুইধরবাবুর পরিবার। তাঁর নাতি গোপাল পেটের রোগে আক্রান্ত হন। কিছুতেই সারছিল না 'ব্যামো'। শরীর এতটাই ভেঙে গিয়েছিল যে, চাষের জমিতে হাল ধরার ক্ষমতা ছিল না। স্বপ্নে দেখা দিয়ে গোপালকে শক্তিপুজোর করার নির্দেশ দেন দেবী মৃন্ময়ী। এরপর খড় ও তালপাতার ছাউনি দিয়ে গ্রামের দুর্গামন্দির তৈরি করেন তিনি। পুকুরে পদ্মফুলের ভ্যাট ও চাষের গুড় দিয়ে ভ্যাটের লাডডু তৈরি করে নিবেদন করা হয় দশভূজাকে। ফলও মেলে হাতনাতে।

আরও পড়ুন: নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত, এবছর দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ শহরের এই বিখ্যাত পুজোয়

শোনা যায়, দুর্গাপুজো শুরু করার পর ফুলে ফেঁপে ওঠে বড়মণ্ডল পরিবারের জমিদারী। এলাকায় যশ ও প্রতিপত্তি বাড়ে গোপালের। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে আধুনিক ধাঁচের মন্দির ও নহবতখানা। পুজোর সময়ে গ্রামে মেলার বসার চলও শুরু হয়। জমিদারি এখন না থাকলেও, পুজো জৌলুস কমেনি এতটুকু। পুজোর চারদিনে গ্রামে বাড়িতে ভিড় করেন বড়মণ্ডল পরিবারের উত্তরসূরীরা। পরিবারের বর্তমান সদস্য দেবাশিস মণ্ডল জানালেন, 'আশেপাশের গ্রামগুলিতে নবমীতে পাঁঠা বলি হলেও, আমরা জীবহত্যা পছন্দ করি না।' এই বড়মণ্ডল বাড়ির ঠাকুর না দেখলে পুজোই অসম্পূর্ণ থাকে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে। 

Share this article
click me!