
বছর ঘুরলেই রাজ্যের চারটি পৌরনিগমে নির্বাচন (Municipal Corporation Election)। বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি পৌরনিগমে ২২ জানুয়ারি নির্বাচন (Election)। আর তার আগে বৃহস্পতিবার দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল তৃণমূল (TMC)। চারটি পৌরনিগমের প্রার্থী তালিকাই প্রকাশ করা হয়েছে। আর বিধাননগরে (Bidhannagar) প্রার্থী তালিকায় (Candidate List) বড় চমক দিল ঘাসফুল শিবির।
গত কয়েকদিন ধরেই তৃণমূলের প্রার্থী তালিকাকে ঘিরে নানা জল্পনা চলছিল। আর বৃহস্পতিবার বিধাননগর পৌরনিগমের নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই যাবতীয় জল্পনার অবসান হয়ে গিয়েছে। তালিকা প্রকাশ হতেই দেখা গেল ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে সব্যসাচী দত্তকে (Sabyasachi Dutta)। এক সময় অবশ্য তিনি বিধাননগরের মেয়র (Mayor) ছিলেন তিনি। আসলে ওই এলাকার দাপুটে নেতাও ছিলেন। ওই এলাকা তাঁর হাতের তালুর মতোই পরিচিত। কিন্তু, বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election) আগে গেরুয়া শিবিরে তিনিও নাম লিখিয়েছিলেন। তবে বিশেষ কিছু সুবিধা তিনি সেখানে করে উঠতে পারেননি। তারপর আবার তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হয় তাঁর।
এদিকে তৃণমূলে তিনি এলেও তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) প্রার্থী করবেন কিনা তা নিয়ে একটা জল্পনা ছিলই। আর বৃহস্পতিবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। জানা যায় যে দল বদল করলেও এখনও তাঁর উপরই ভরসা রয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমোর। এক্ষেত্রে দলের একাংশের মতে, দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিজেপিতে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর ভোটে ধরাশায়ী হওয়ার পরে ফের তৃণমূলে ফেরেন। তাহলে কি ফের বিধাননগরের মেয়র তাঁকেই করবে দল? তা অবশ্য জানা যায়নি।
আরও পড়ুন- ভরসা নেই ‘হাতে’, জোটে নেই বামেরা, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে জোর চর্চা
প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর সংবাদ মাধ্যমের সামনে সব্যসাচী বলেন, "দীর্ঘ বছর ধরে আমি ভোটে লড়ছি। নিকাশি ব্যবস্থাকে উন্নত করার চেষ্টা করব। আমি অন্য দলে চলে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে মমতা দি আবার আমাকে দলে নিয়েছেন। কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। ওনার সম্মান যাতে রাখতে পারি, সেটাই প্রার্থনা করব। বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছিলাম। হেরেও গিয়েছিলাম। তবে আমি এখনও বলতে পারি, ব্যক্তি আমি হারিনি, মমতাদির ছবির বিরুদ্ধে লড়তে পারিনি।" সব্যসাচীর পাশাপাশি এই পৌরনিগমের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হচ্ছেন প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে আরাত্রিকা ভট্টাচার্য। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হচ্ছেন দেবরাজ চক্রবর্তী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কালীঘাটে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় ও দলের অন্য শীর্ষস্তরের নেতাদের বৈঠকের পরই প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। যদিও সেখানে প্রার্থীদের নাম তিনি ঘোষণা করেননি। শুধু জানিয়েছেন 'স্বচ্ছ ভাবমূর্তির উপর গুরুত্ব দিয়েই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।'
বিধাননগরের পাশাপাশি শিলিগুড়ি পৌরনিগমের প্রার্থী তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। প্রার্থী তালিকায় হেভিওয়েটদের মধ্যে নাম রয়েছে গৌতম দেবের। এছাড়াও রয়েছে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রঞ্জন সরকার, দাপুটে তৃণমূল নেতা রঞ্জন শীল শর্মা সহ প্রবীন তৃণমূল নেতা প্রতুল চক্রবর্তীর নামও রয়েছে। পাশাপাশি বিজেপি, সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানকারী একাধিক নেতৃত্বকেও তৃণমূলের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কমল অগরওয়াল। গত পুরভোটে বামেদের হয়ে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানকারী খুসবু মিত্তলকে টিকিট দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফে।