দলের সঙ্গেই মতবিরোধ, পদত্যাগ করলেন দু' বার জেতা তৃণমূল কাউন্সিলর

  • কাউন্সিলর পদে ইস্তফা সুনীল মালাকারের 
  • তিনি হুগলি- চুঁচুড়া পুরসভার কাউন্সিলর
  • একই সঙ্গে চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলর পদে ছিলেন তিনি
  • পদত্যাগী কাউন্সিলরের উপরে ক্ষুব্ধ ছিল দল

debamoy ghosh | Published : Dec 27, 2019 12:06 PM IST / Updated: Dec 27 2019, 06:35 PM IST

আচমকা  কাউন্সিলর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন হুগলি- চুঁচুড়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর সুনীল মালাকার। তিনি ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হওয়ার পাশাপাশি পুরসভার জলকল দফতরের চেয়ারম্যান-ইন- কাউন্সিল পদেও ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, দলের নেতা কর্মীদের একাংশের বারংবার খারাপ ব্যবহারে অসম্মানিত হয়েই পদ ছাড়লেন তিনি। কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, 'যে দাঁত ব্যথা দেয়, তাকে তুলে ফেলাই ভালো।'

পর পর দু' বার কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন সুনীলবাবু। এ হেন গুরুত্বপূর্ণ কাউন্সিলর আচমকা পদ ছাড়ায় চুঁচুড়া এলাকায় জোর চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। তৃণমূলেরই একাংশের অবশ্য অভিযোগ, পরিষেবা নিয়ে সুনীলবাবুর বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ক্ষোভ ছিল। অভিযোগ, তিনি নিয়মিত এলাকার কাজের তদারকি তো করেনই না। তার উপর কেউ তাঁর কাছে কোনও প্রয়োজনে গেলে তিনি দুর্ব্যবহারও করতেন। স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদারের কাছেও ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়েছিল বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। ফলে ভবিষ্যতে সুনীলবাবুর টিকিট পাওয়া মুশকিল ছিল। 

আরও পড়ুন-দলে বেনো জল ঢুকেছে, মানলেন দিলীপ, বললেন ঝামেলা ছাড়া রাজনীতি হয় না

আরও পড়ুন- ক্ষমতা বদলেছে ঝাড়খণ্ডে, এবার ম্যাসাঞ্জোরে নীল- সাদার আশায় অনুব্রত

সম্প্রতি ওই এলাকায় 'দিদিকে বলো' কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ক্ষোভের কথা জানতে পারেন বিধায়ক অসিতবাবু। গত ২৪ ডিসেম্বর এলাকার ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা নিয়ে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা সুনীলবাবুর বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। কাউন্সিলরের অভিযেগ, দলীয় কিছু নেতার মদতেই তাঁর বাড়িতে ইট ছোঁড়া হয়। মা, স্ত্রী ও মেয়েকে অশ্রাব্য গালিগালাজও করা হয়েছে। এর পরই তিনি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। 

কাউন্সিলর পদ ছাড়লেও তিনি তৃণমূল ছাড়ছেন না বলেই দাবি করেছেন সুনীলবাবু। এ দিন দুপুরে তিনি প্রথমে পুর প্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় এবং তার পর মহকুমাশাসক অরিন্দম বিশ্বাসের অফিসে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন। স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার ইঙ্গিত দেন, দলীয় স্তরে এধরনের আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। মুখে অবশ্য বিধায়ক বলেন, 'কেউ যদি না থাকতে চায় তাকে তো আর জোর করে আটকে রাখা যায় না। তবে কাউন্সিলরের ইস্তফা গ্রহণ করা হবে কি না, তা মহকুমাশাসক দেখবেন।' 

গত কয়েকমাস ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সুনীলবাবু সঙ্গে পুরসভার অন্যান্য কাউন্সিলরদেরমতবিরোধ চলছিল।  দলীয় বিধায়কও তাঁর উপর অসন্তুষ্ট ছিলেন বিভিন্ন কারণে। সামনেই পুর নির্বাচন। এর মধ্যে দলের সংখ্যাগরিষ্ঠের বিরাগভাজন হওয়া, তার উপর এলাকার ভোটারদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়াকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ভাবে খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় ছিলেন ন। তাই বাধ্য হয়েই তাঁর এই পদত্যাগ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Share this article
click me!