স্টেশনের বাইরে অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা প্রিয়ার্ঘ সাহা ঠিকা শ্রমিকদের পথ আটকান। নিজেকে ইংলিশবাজার থানার সাব ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে তল্লাশি শুরু করেন। অভিযোগ, তল্লাশির নামে পাঁচটি মোবাইল ও কয়েক হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেন তিনি।
ভুয়ো পুলিশ আধিকারিক গ্রেফতার মালদহে। পুলিশ আধিকারিক সেজে ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেফতার খোদ শাসক দলের নেতা। ছিনতাইকারী তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতারের পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া সামগ্রীর তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মালদহ স্টেশন রোড এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে তৃণমূল নেতার এই কীর্তির জেরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে দলের অন্দরে।
আরও পড়ুন- সকাল থেকেই রাখি বন্ধন উৎসবে মেতে উঠলেন লাভলী-সুজিত-ফিরহাদরা
শুক্রবার গভীর রাতে বেঙ্গালুরু থেকে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করে মালদহ টাউন স্টেশনে পৌঁছায় উত্তর দিনাজপুরের পাঁচ বাসিন্দা। স্টেশন থেকে বেরিয়ে শহরের রথবাড়ি মোড়ে বাস ধরার জন্য আসছিলেন তাঁরা। ঠিক সেই সময় স্টেশনের বাইরে অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা প্রিয়ার্ঘ সাহা তাঁদের পথ আটকান। নিজেকে ইংলিশবাজার থানার সাব ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে ঠিকা শ্রমকিদের তল্লাশি শুরু করেন। অভিযোগ তল্লাশির নামে ঠিকা শ্রমিকদের থেকে পাঁচটি মোবাইল ও কয়েক হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেন তিনি। পড়ে ওই ঠিকা শ্রমিকরা ইংলিশবাজার থানায় অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর এই ঘটনাকে ঘিরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে মালদহের রাজনৈতিক মহলে।
আরও পড়ুন- আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ, গ্রেফতার রাজ্য়ের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
ওই ঠিকা শ্রমিকদের মধ্যে বকুল রায় বলেন, "ইলেকট্রিক পিলার বসানোর কাজের জন্য গত পাঁচ মাস আগে বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে কাজ শেষ করে শুক্রবার দুপুরে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছাই। এরপর হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে মালদহ টাউন স্টেশনে রাত ২টো নাগাদ আসি। বাড়ি যাওয়ার জন্য রথবাড়ি মোড় যাওয়ার পথে আমাদেরকে আটক করে আকাশ ওরফে প্রিয়ার্ঘ সাহা। নিজেকে ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে আমাদের তল্লাশি শুরু করেন। আমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন প্রচুর পরিমানে মাদক পাচারের খবর আছে আমাদের কাছে। তাই এই তল্লাশি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের পাঁচটি মোবাইল ও কয়েক হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেন অভিযুক্ত ও তাঁর এক সঙ্গী। এরপর ইংলিশবাজার থানায় আমরা অভিযোগ জানাই।"
আরও পড়ুন- রাখিতেও হিট মোদী-মমতা, কোভিডে প্রথম লাভের মুখ দেখছেন বিক্রেতারাও
এই ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, "এ রাজ্যে তৃণমূল নেতারা এত নিচে নামবে তা ভাবা যায় না। এই চিত্র এখন রাজ্যের সর্বত্র। যে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাঁকে জেলা থেকে রাজ্য বহু তাবড় তাবড় তৃণমূল নেতার সঙ্গে এক ফ্রেমে দেখা গিয়েছে। এই ধরণের অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।"
এদিকে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই কার্যত ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউ এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজরিয়া জানান, 'একটি ছিনতাইয়ের ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।'