অনুব্রতর প্রতি সহানুভূতি রেখে সৌগতর অভিমত, "অসুস্থতার কারণেই সে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিতে পারছিল না। একটা অসুস্থ লোককে এইভাবে জোর করে নিয়ে যাওয়া ঠিক নয়।” কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, “এখন একটা কথা চলছে, নরেন্দ্র মোদীর যুগ ভাই, ইডি আর সিবিআই।”
ইডির হাতে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার হওয়ার প্রায় ১৯ দিন পরেই গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এবার তাঁর প্রসঙ্গে মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে খড়দহের রুইয়া ৫৬ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে আয়োজিত তৃণমূলের রাখি বন্ধন উৎসবে যোগ দিয়ে সৌগত রায় বলেন "অনুব্রতের গ্রেফতারিতে আমি অত্যন্ত দুঃখিত। অনুব্রত ভালো সংগঠক ছিল, দলের ক্ষতি হল। তবে ওর কোনও দোষ এখনও প্রমাণিত হয়নি, তাই দোষ প্রমাণিত হলে ওকে কী করা হবে, তা দল নিশ্চয়ই পরে সিদ্ধান্ত নেবে।"
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারিতে প্রচণ্ড অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক শিবির। আজকের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে সৌগত রায় আরও বলেন, “পার্থ চ্যাটার্জির ব্যাপারে আমরা লজ্জিত, তবে অনুব্রতের ব্যাপারে আমরা এখনও সঠিক জানিনা। চার্জশিটে ওঁর নাম ছিল না। এই ব্যাপারে আরও তথ্য সামনে এলে আমরা বলব।”
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, “এখন একটা কথা চলছে, নরেন্দ্র মোদীর যুগ ভাই, ইডি আর সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কেন্দ্র সরকারের বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হচ্ছে।”
দলের কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর সঙ্গে তৃণমূল কোনওরকম সম্পর্ক রাখবে না বলেই জানান সৌগত। পাশাপাশি, শুভেন্দু আধিকারী, নীরব মোদী, মেহুল চোকশি, বিজয় মালিয়া, ললিত মোদীকে কেন এখনও গ্রেফতার করা হয়নি, সেই প্রশ্নও তোলেন তৃণমুল সাংসদ। তাঁর বক্তব্য, যাঁরা বিজেপির বড় বন্ধু, তাঁরা দুর্নীতি করেও পালিয়ে বেড়াচ্ছেন অথচ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সিবিআইয়ের কাছে বারবার হাজিরা এড়িয়ে যাওয়া অনুব্রতর প্রতি সহানুভূতি রেখে সৌগতর অভিমত, "অসুস্থতার কারণেই সে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিতে পারছিল না। একটা অসুস্থ লোককে এইভাবে জোর করে নিয়ে যাওয়া ঠিক নয়।”
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডলকে গরু পাচারকাণ্ডের তদন্তে মোট ১০বার তলব করেছিল CBI। তার মধ্যে ৯ বারই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা দেননি বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি। বুধবারও ‘অসুস্থতা’-র জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে হাজিরা এড়িয়ে যান। এই আবহে এক সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক দাবি করেছেন বোলপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী প্রকাশ্যে জানান, অনুব্রত মণ্ডলের কথাতেই (চাপে পড়েই) তিনি সাদা কাগজে ‘বেড রেস্ট’ অর্থাৎ বিশ্রামের কথা লিখেছিলেন। এবার এই দাপুটে নেতার অসুস্থতার সঠিক চিকিৎসা হবে বলেই আশা রাখছেন সব বঙ্গবাসী।
আরও পড়ুন-
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার 'অসভ্য' বললেন সৌগত রায়
গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডল, কিন্তু তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ঠিক কত?