“উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গোয়া, অসম, মেঘালয়ের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি ভেঙে পৃথক রাজ্য গড়ার দাবি নিয়ে কেন্দ্র সরকার নীরব রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারা বাংলা এবং বিহার নিয়ে চক্রান্ত করছে”, জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র।
একুশের বিধানসভা ভোটে হেরে যাওয়ার পর বাংলাকে কবজা করতে দ্বিমুখী কৌশল নিয়েছে বিজেপি। শনিবার রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায়। গেরুয়া শিবিরের কৌশলের বিরুদ্ধে তাঁর যুক্তি, “ বাংলার ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে। বিহারের পূর্ণিয়া, কিষানগঞ্জ, কাটিহারের সঙ্গে আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ির কিছু অংশকে জুড়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার চেষ্টা চলছে।” কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রাপ্য অর্থ না পাওয়া নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে তাঁর বক্তব্য, “কাজের বদলে খাদ্য, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যকে তার বরাদ্দ না দিয়ে অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরি করা হচ্ছে।”
সাংবাদিক সম্মেলনে দলীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে বিভিন্ন সময়ে যে সব আবেদন জমা পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে যে, অন্তত ২০টি পৃথক রাজ্যের দাবি উঠেছে। যেমন— মণিপুরে কুকিল্যান্ড, তামিলনাড়ুতে কঙ্গুনাড়ু, কর্নাটকে তুলুনাড়ু, উত্তরপ্রদেশে অওয়ধ প্রদেশ, পূর্বাঞ্চল, বুন্দেলখন্ড এবং পশ্চিমাঞ্চল, রাজস্থানে ভরতপুর। মহারাষ্ট্র থেকে বিদর্ভ অঞ্চল বার করে এনে পৃথক রাজ্যের দাবিও চলছে দীর্ঘ দিন ধরে।” তিনি আরও বলেন, “উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গোয়া, অসম, মেঘালয়ের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি ভেঙে পৃথক রাজ্য গড়ার দাবি নিয়ে কেন্দ্র সরকার নীরব রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারা বাংলা এবং বিহার নিয়ে চক্রান্ত করছে বলে আমাদের কাছে খবর।” সেই সঙ্গে তাঁর এও দাবি, “বিজেপির এই ষড়যন্ত্র বাংলার মানুষ রুখে দেবে। ঠিক যে ভাবে ঔপনিবেশিক শাসকরা বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিল।”
তৃণমূলের দু’টি অভিযোগকেই কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির দলীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “রাজ্য ভাগের কোনও প্রশ্নই উঠছে না। বিভিন্ন দুর্নীতিতে যখন তৃণমূলের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে, তখন রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এই সব পরিকল্পিত মিথ্যা প্রচার করছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গ তথা দার্জিলিং পশ্চিমবঙ্গের মুকুট। একজন বাঙালি হিসাবে কখনওই চাইব না তা আলাদা হোক।”
আরেকদিকে, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ রাজ্যের কোষাগারে না আসা সম্পর্কে সুখেন্দুশেখর রায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লকেট বলেছেন, “কেন্দ্রীয় যোজনায় রাজ্যকে অর্থ না বরাদ্দের পিছনে কোনও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নেই। রাজ্য বহু ক্ষেত্রে হিসাবের খতিয়ান দিতে পারছে না। এক খাতের টাকা অন্য খাতে খরচ করছে, এমন নজিরও রয়েছে। কেন্দ্রের বরাদ্দ অর্থ সঠিক নিয়ম মেনে খরচ না করা হলে কেন্দ্র মেনে নেবে কেন?”
আরও পড়ুন-
বীরভূমে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেবেন সিউড়ির দুই নেতা? শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে একই মন্দিরে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’
পোস্তর খোসার দাম ৩০ কোটি টাকা! আনন্দপুরের গুদামে হানা দিয়ে কলকাতা পুলিশের বড়সড় সাফল্য
ছুটির দিনে খোশ মেজাজে অভিষেকের গড়ে শুভেন্দু অধিকারী, সূচনা করবেন কালীপুজোর উৎসব