সাত সকালে ঘটে গেল চরম মর্মান্তিক ঘটনা। গরু নিয়ে দাদুর সঙ্গে নদী পেরিয়ে চারণভূমিতে যাচ্ছিল নাতি। মাঝ নদীতেই বাধে বিপত্তি। টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায় বছর এগারোর রনি। মুহূর্তের মধ্যেই নদীর জলে তলিয়ে যায় সে। চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেনি দাদু।
টানা বৃষ্টির ফলে সমস্যায় পড়েছেন মুর্শিদাবাদের মহম্মদপুরের বাগডাঙ্গা ঘোষ পাড়ার গোয়ালা সম্প্রদায়ের মানুষরা। অতিবৃষ্টিতে গরুর চারণভূমি বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এর ফলে নদী পেরিয়ে মহম্মদপুরের চর বাবুপুর এলাকায় যেতে হয় বাসিন্দাদের। সেখানেই গরুগুলিকে ছেড়ে দেন। সেই মতো আজ সকালে নাতি রনিকে নিয়ে ওই এলাকায় যাচ্ছিলেন বিভূতি ঘোষ। স্থানীয় বাগডাঙ্গা মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল রনি। নদীর মধ্যে দিয়ে দাদুর সঙ্গে কথা বলতে বলতে গরুর লেজ ধরে এগিয়ে যাচ্ছিল সে। কিন্তু, মাঝ নদীতে বাধে বিপত্তি। হঠাৎই তার হাত থেকে গরুর লেজ ফসকে যায়। সঙ্গে সঙ্গে টাল সামলাতে না পেরে নদীতে পড়ে যায়।
এরপর নদীর জলে নাতিকে হাবুডুবু খেতে দেখে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন বিভূতিবাবু। কিন্তু, মুহূর্তের মধ্যেই তলিয়ে যায় নাতি। কিছুই করতে পারেননি তিনি। নদীর পাড়েই বসে পড়েন। এই দুর্ঘটনার পর নিজের মনে মনে বলেন থাকেন, "চোখের সামনে নাতি নদিতে তলিয়ে গেল। আমি কিছুই করতে পারলাম না। এই কষ্ট নিয়ে আমার বেঁচে থাকার কি মূল্য আছে, ছেলেকেই বা কি উত্তর দেব।" এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে পুলিশ। ডুবুরি নামিয়ে নদীতে শুরু হয় খোঁজ। যদিও এখনও পর্যন্ত রনির কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন- আজ বছরের বৃহত্তম দিন, রইল অজানা বেশ কিছু তথ্য
এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য চুমকি ঘোষ বলেন, "এখানকার ঘোষেদের এক মাত্র জীবিকা গরু পালন। বর্ষা এলেই গরু নিয়ে ওদের সমস্যায় পড়তে হয়। অথচ এদের স্থায়ী সমাধানের কথা কেউ ভাবে না।"