নীল সাদা রং আছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার নেই, আমরণ অনশনে দুই বন্ধু

  • আলিপুরদুয়ারের তুততুরি গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘটনা
  • হাজার চেষ্টাতেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল ফেরেনি
  • শেষ পর্যন্ত আমরণ অনশনে দুই বন্ধু
  • চিকিৎসকের অভাব রয়েছে, স্বীকার করলেন সরকারি কর্তা

না, এবার আর প্রেমিকার মন জয়ের চেষ্টায় ধরনা নয়। বরং গ্রামের একমাত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে অনশন শুরু করল দুই বন্ধু। তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন ৯টি গ্রাম এবং ১১টি চা বাগানের বাসিন্দা এবং শ্রমিকরাও। 

আলিপুরদুয়ার ২ নম্বর ব্লকের তুততুরি গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেটিই আশপাশের গ্রামগুলিতে বসবাসকারী কয়েক হাজার মানুষের ভরসা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে ঝকঝকে নীল সাদা রংয়ের প্রলেপ পড়েছে। তৈরি হয়েছে নতুন ভবনও। কিন্তু বাইরেটা দেখে এই গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরের ছবিটা ঠিক বোঝা সম্ভব নয়।

Latest Videos

আরও পড়ুন- বিদ্যুৎ বেচে আয় করছে বাংলার এই স্কুল, শিখতে পারে অন্যরাও

অভিযোগ, প্রতি সপ্তাহে মাত্র দু' একদিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তারবাবু আসেন। নতুন ভবন তৈরি হলেও হাসপাতালে কোনও নার্স নেই। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য প্রসবের ব্যবস্থাও  নেই হাসপাতালে। এমন কী অক্সিজেনে সিলিন্ডারের মতো সাধারণ পরিষেবাও অমিল। ডাক্তার বাবু, নার্সদের জন্য কোয়ার্টার তৈরি হলেও এখন তা দুস্কৃতীদের আখড়া। 

চিকিৎসক, নার্স না থাকায় সপ্তাহের অধিকাংশ দিনই স্বাস্থ্যকেন্দ্র তালা মারা থাকে। চিকিৎসার জন্য চা বাগান এবং গ্রামের মানুষের ভরসা চল্লিশ কিলোমিটার দূরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল। শুধুমাত্র সোমবার, শুক্রবার সকাল দশটা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী দেখেন ডাক্তারবাবু।  

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং নিয়মিত পরিষেবা শুরু করার জন্য একাধিক বার জানানো হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে। আন্দোলনের পথেও গিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পথসভা, মিটিং-মিছিল, চিঠি চালাচালি সত্ত্বেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল ফেরাতে আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুই বন্ধু শৈলেন্দ্র নার্জিনারি এবং ভীম ছেত্রী। 

বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির দাবি জানিয়ে অনশনে বসা লোকনাথপুরের শৈলেন্দ্র এবং ধওলাঝোরার ভীম ছেত্রীর অভিযোগ, 'তিন দশক ধরে একই অবস্থা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। ভোটের আগে প্রত্যেকবারই নেতারা স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু ভোট মিটতেই অবস্থা আগের মতোই থাকে।  অনেক আন্দোলনেও কাজ না হওয়ায় এবার তাই অনশণে বসেছি আমরা।' 

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অনশনরত দুই বন্ধুর সঙ্গে তাঁরাও রাত জাগবেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। 

জেলার মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামীর অবশ্য বলেন, 'ওঁরা অনশনে না বসে প্রথমে আমাদের জানাতে পারতেন। আমরা ওনাদের দাবি রাজ্যে সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারতাম।' জেলায় যে চিকিৎসকের সঙ্কট রয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন সুবর্ণবাবু। তিনি জানান, গোটা আলিপুরদুয়ারে যেখানে ২৫০ জন চিকিৎসক প্রয়োজন, সেখানে আছেন মাত্র ১২০ জন। উপরমহলে সেকথা জানানো হলেও সমস্যার সুরাহা হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। 
 

Share this article
click me!

Latest Videos

‘Chinmoy Krishna-কে আমি মুক্ত করবোই’ নির্ভীক Bangladeshi আইনজীবী Rabindra Ghosh-এর চরম প্রতিশ্রুতি
'ওদের লেজ কখনও সোজা হয় না' কেন বললেন শুভেন্দু! দেখুন বুঝে যাবেন | Suvendu Adhikari | Bangla News
জালে পুরনো পাপী! জাল পাসপোর্ট পৌঁছে যেত অনুপ্রবেশকারীদের হাতে! | Duttapukur News | Kolkata
বিস্ফোরক অভিযোগ Agnimitra Paul-এর! Mamata-র বিরুদ্ধে RG Kar কাণ্ডের প্রমাণ লোপাটের সরাসরি তোপ
'ইয়ে ডর মুঝে আচ্ছা লাগা' হিন্দুদের প্রতি সহানুভুতি, বাংলাদেশী জঙ্গিদের টার্গেট Suvendu Adhikari