পুরুলিয়ায় তুষারপাত! অবিশ্বাস্য হলেও শনিবার সাত সকালে পুরুলিয়ার বেগুনকোদরের বেশ কিছু গ্রামে খড়ের গাদায়, শুকনো গাছের গুঁড়ির উপর বরফের মতো সাদা আস্তরণ দেখা গেল। গ্রামবাসীদের দাবি, বরফই পড়েছে সেখানে। বরফ দেখতে পেয়ে অনেকেই কৌতূহলী হয়ে উঠেন। গ্রামাঞ্চলে ভিড় জমে যায় বরফ দেখতে। অনেকেই কুচি কুচি সাদা আস্তরণের সামনে সেলফিও তোলেন।
প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেও জীবনের প্রথমবার তুষারের আবরণ দেখতে বেরিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় প্রাক্তন ব্যাংক কর্মী ষাটোর্ধ্ব তপন কুমার বিদ বলেন, ‘জ্ঞানত প্রথমবার এই রকম তুষারপাত চাক্ষুষ করলাম। এর আগে এখানে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়লেও এখানে কোনও দিন বরফ পড়তে দেখিনি বা শুনিনি।’
আরও পড়ুন- ট্রি হাউসে রাত্রিবাস, এবার শীতের ছুটির ঠিকানা হোক বাঁকুড়া
ভৌগলিকভাবে পুরুলিয়া জেলার অবস্থান দক্ষিণবঙ্গের সব চেয়ে উঁচুতে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ২৪০ মিটার। ভূ-প্রকৃতি অনুসারে গ্রীষ্মে প্রচণ্ড গরম, বর্ষায় উত্তরবঙ্গের পরে সব চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় পুরুলিয়া জেলাতেই। আবার শীতে তাপমাত্রা নেমে যায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। পুরুলিয়ার পাহাড় ঘেরা এলাকায় ঠান্ডার তীব্রতা আরও বেশি। শনিবার সকালে অবশ্য পুরুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস। তা সত্ত্বেও পুরুলিয়ায় কোনওভাবেই তুষারপাত হতে পারে না বলে জানান পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রের আধিকারিক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘তুষারপাত হতে গেলে তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে হবে। যেটা শুক্রবার গভীর রাত বা শনিবার ভোরের দিকেও ছিল না।’ স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, তাপমাত্রা একধাক্কায় অনেকটা নেমে যাওয়ায় শিশির বিন্দুগুলি জমে বরফ হয়ে গিয়েছে।
প্রকৃতির নিয়মের সঙ্গে না মিললেও তুষারপাতই হয়েছে বলে দাবি বেগুনকোদরের বাসিন্দাদের। সাদা রংয়ের ওই মিহি স্তর আদৌ বরফ ছিল কি না, তা এখন আর বোঝার উপায় নেই। শুক্রবার রাতে শিলাবৃষ্টিও হয়নি বলে দাবি গ্রামবাসীদের। ফলে পুরুলিয়ায় বরফ পড়েছে বেগুনকোদরের ছবি আপাতত জেলা জুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যদিও এই ছবিগুলির সত্যতা যাচাই করেনি এশিয়ানেট নিউজ বাংলা।