স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দুর্নীতি, জালিয়াতি, অব্যবস্থার অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু কলকাতার বিখ্যাত সরকারি মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠা মারাত্মক ঘটনা।
ঠিক যেন 'যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে'। সত্যজিৎ রায়ের লেখা এই ফেলুদা কাহিনিতে নেপালে জাল ওষুধ, ইঞ্জেকশনের রমরমা কারবারের কথা উঠে এসেছিল। এবার বাস্তবে এই ঘটনা দেখা যাচ্ছে কলকাতায়। একটি সংস্থার বিরুদ্ধে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে শিশুদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত জাল ইঞ্জেকশন সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। এখানেই শেষ নয়, আরও মারাত্মক অভিযোগ হল, জাল ইঞ্জেকশন সংক্রান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরেও সেই সংস্থা থেকেই ওষুধ, ইঞ্জেকশন কেনা হচ্ছে। এই সংস্থাই রাজ্যের অন্যান্য সরকারি হাসপাতালেও ওষুধ, ইঞ্জেকশন সরবরাহ করে চলেছে বলে অভিযোগ। এই সংস্থার বিরুদ্ধে জাল ওষুধ সরবরাহের অভিযোগ সংক্রান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ উঠছে।
সদ্যোজাতদের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা!
অভিযুক্ত সংস্থার বিরুদ্ধে যে জাল ইঞ্জেকশন সরবরাহ করার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, সেই ইঞ্জেকশন বেশ দামী। যে সদ্যোজাতদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকে, তাদের শরীরে এই ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করা হয়। বাইরে থেকে কিনতে গেলে এই ইঞ্জেকশনের দাম পড়ে ২,০০০ টাকারও বেশি। তবে সরকারি হাসপাতালে ১,০০০ টাকারও কম দরে এই ইঞ্জেকশন পাওয়া যায়। কিন্তু দাম কম হলেও, জাল ইঞ্জেকশন দেওয়া হলে সদ্যোজাতদের প্রাণসংশয় হতে পারে। ইঞ্জেকশনে এই ধরনের জালিয়াতি মারাত্মক অভিযোগ। অথচ অভিযুক্ত সংস্থা বহাল তবিয়তে ব্যবসা করে যাচ্ছে।
ইঞ্জেকশনে ছত্রাক!
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এনআরএস-এ অসুস্থ সদ্যোজাতদের জন্য যে বিভাগ রয়েছে, সেখানে থাকা ইঞ্জেকশনে ছত্রাক দেখতে পান কর্তব্যরত নার্সরা। এরপর স্বাস্থ্য দফতর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু এনআরএস কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। উল্টে অভিযুক্ত সংস্থা থেকেই নতুন করে ইঞ্জেকশন কেনা হয়েছে। ফলে এই মেডিক্যাল কলেজের কর্তাব্যক্তিদের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন-
মেডিক্যাল কলেজ থেকে ১১ লক্ষ টাকার ইঞ্জেকশন চুরি, অভিযোগের তির তৃণমূল ঘনিষ্ঠ চিকিৎসকের দিকে
প্রসূতিকে 'ইঞ্জেকশন', মৃত্যুর পর রণক্ষেত্রের চেহারা নিল বারাসত হাসপাতাল