
কলকাতার আকাশে সম্প্রতি ড্রোনের মতো দেখতে কয়েকটি বস্তু দেখা যাওয়ার পর থেকেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রথম প্রশ্ন উঠছে—সেগুলি কি আদৌ ড্রোন ছিল, নাকি অন্য কিছু যাকে ভুলবশত ড্রোন বলে মনে হয়েছে? তবে এই বিষয়টি নিয়ে কোনও রকম জল্পনা বা গুজব না ছড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, কলকাতার আকাশে দেখা গিয়েছিল যে বস্তুগুলি, সেগুলি আদৌ ড্রোন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। এদিকে, এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই সময় ড্রোন ওড়ানোর কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাঁদের মতে, অনেক সময় আলো লাগানো বেলুনকেও দূর থেকে ড্রোন বলে ভুল হতে পারে। তবে যেসব ড্রোন-সম্পর্কিত রিপোর্ট পাওয়া গেছে, সেগুলি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি সেগুলি সত্যিই ড্রোন হয়ে থাকে, তবে সেগুলি অবৈধ, কারণ ওই ধরনের ড্রোন ওড়ানোর কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে ফোর্ট উইলিয়ামের কাছে হেস্টিংস অঞ্চলে ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ, কারণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই এলাকাকে 'নো ফ্লাই জোন' হিসেবে ঘোষণা করেছে। যদি সত্যিই সেখানে অবৈধ ড্রোন ওড়ানো হয়ে থাকে, তাহলে তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বিষয়।
এছাড়াও, ওই প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে ইস্টার্ন কমান্ড ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশ ও অন্যান্য সূত্র থেকে ছবি চেয়েছে এবং পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যায় হেস্টিংস, ভবানীপুর, ময়দান, দ্বিতীয় হুগলি সেতু, রেড রোড এবং রবীন্দ্র সদনের আশেপাশে ড্রোনের মতো দেখতে কয়েকটি বস্তু উড়তে দেখা যায়। প্রায় ৬-৭টি ড্রোন সদৃশ বস্তু আকাশে ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনার পরেই কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এবং সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডকে বিষয়টি জানানো হয়।
যদিও এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা পড়েনি, পুলিশ নিজ উদ্যোগে তদন্ত শুরু করেছে। তবে এই বস্তুগুলি কোথা থেকে এল এবং কোথায় চলে গেল, তা এখনও রহস্য। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এগুলি অন্তত ২৫ মিনিট আকাশে ছিল এবং সম্ভবত তারও ২০ মিনিট আগে থেকেই ওড়া শুরু করেছিল। ফলে অনুমান করা হচ্ছে, এগুলির ব্যাটারির ক্ষমতা সাধারণের তুলনায় অনেক বেশি ছিল।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (ATC) রাডারে সাধারণত বিমানের গতিবিধি ধরা পড়ে। তবে আকারে ছোট হওয়ায় ড্রোনের মতো বস্তুগুলি সচরাচর রাডারে ধরা পড়ে না।
অন্যদিকে, এক সময় হাওড়ার কদমতলা ও সল্ট লেক সেক্টর ফাইভের মধ্যে ড্রোনের মাধ্যমে রক্ত ও ইউরিনের নমুনা পরিবহন করা হত। তবে বর্তমানে সেই পরিষেবা বন্ধ রয়েছে।
ফলে এই অজানা উড়ন্ত বস্তুগুলি ঘিরে রহস্য এখনও কাটেনি। সীমান্তে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে কলকাতার আকাশে এমন ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।