
Hooghly News: এ যেন ঠিক বাঙালি বাবু, ইংলিশ মেমে-র মতোন গল্প! রাওয়ালপিন্ডি থেকে ভারতে এসেছিলেন, তারপর আর ফিরে যাননি দেশে। বাংলার হুগলী জেলার চন্দননগর থেকে গ্রেফতার এক পাকিস্তানী নাগরিক (pakistan)। ভালো করে বললে, বোঝায়- হুগলীর চন্দননগর থেকে গ্রেফতার বাঙালিবাবুর পাকিস্তানী স্ত্রী।
গত ৪৫ বছর ধরে চন্দননগর কুঠিরমাঠ এলাকায় থাকতেন ফতেমা বিবি। তার স্বামী ও সন্তানও রয়েছে। এদেশে প্রায় ৪৫ বছর ঘরও করে ফেলেছেন ধৃত ফতেমা বিবি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮০ সালে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে বাবার সঙ্গে ভারতে এসেছিলেন ফতেমা। এরপর ১৯৮২ সালে চন্দননগরের এক বেকারি মালিক মুজফফর মল্লিকের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। ওই দম্পতির দুই মেয়েও রয়েছে। শুধু তাই নয়, মেয়েদের বিয়েও হয়ে গিয়েছে।
আরও জানা গিয়েছে, ভিসা নিয়ে আসার এক বছর পর থেকেই পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের খাতায় ফতেমা নিখোঁজ ছিলেন। কাশ্মীরেরে পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার পর থেকেই উত্তপ্ত ভারত-পাক দুদেশের সম্পর্ক। এমনকি ভারতে অবস্থিত পাক নাগরিকদের দ্রুত দেশে ফিরে যেতে বলেছে ভারত সরকার (India Government)। তারপরই শাহের নির্দেশে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে পাকিস্তানী নাগরিকদের ধরপাকড়। যারা এতদিন ধরে অবৈধভাবে ভারতে বাস করছেন। তাদের নিজেদের দেশে দ্রুত ফিরে যেতে বলা হচ্ছে।
এদিকে শনিবার চন্দননগরের কুঠির মাঠের পাশে মসজিদের পিছনে মুজফফর মল্লিকের দোতলা বাড়ি। সেই বাড়ি থেকে আদতে পাকিস্তানী নাগরিক ফতেমা বিবিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্যদিকে, এতদিন পর একজনকে বিদেশী নাগরিককে পাকিস্তানী হিসাবে গ্রেফতার করায় তার প্রতিবেশীরা। এদিকে আইনি জটিলতা কাটিয়ে ভারতেই থেকে যেতে চাইছেন ফতেমা। কারণ, পাকিস্তানে এখন নাকি তার কেউ নেই। এই বিষয়ে ফতেমার স্বামী ও মেয়েরা জানান, হুগলীর নালিকুলে বাড়ি ছিল ফতেমার পূর্বপুরুষদের। তার পাকিস্তানে কেউ নেই।
যারা আছে সবাই ভারতে। সেখানেই তার জন্ম। পরে কাজের সূত্রে রাওয়ালপিন্ডি চলে যান ফতেমার বাবা। সেখান থেকেই ৮০ সালে ভারতে আসেন। তারপর আর কখনও পাকিস্তান ফিরে যাননি তারা।
অন্যদিকে, পাকিস্তান লাগাতার ১০ দিন ধরে নিয়ন্ত্রণ রেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধার, নৌশেরা, সুন্দরবনী এবং আখনুরের মতো বেশ কয়েকটি এলাকায় গুলি চালিয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এর কড়া জবাব দিয়েছে।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শনি ও রবিবার রাতে জম্মু ও কাশ্মীরের পাঁচটি জেলায় আটটি স্থানে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। যদিও, এই ঘটনায় কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও-এর সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকে পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই উত্তেজনাপূর্ণ। এরপর থেকে लगातার ১০ তম রাত পাকিস্তানের তরফ থেকে গুলি চালানো হচ্ছে। পহেলগাঁও হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিল।
প্রতিরক্ষা মুখপাত্রের মতে, ৩ এবং ৪ মে-র রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কোনও উস্কানি ছাড়াই জম্মু ও কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি এলাকায় গুলি চালিয়েছে। এই গুলিবর্ষণ নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে অবস্থিত পাকিস্তানি চৌকি থেকে করা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা ২৪ এপ্রিল রাত থেকে শুরু হয়েছে, যখন ভারত পহেলগাঁও-এর সন্ত্রাসবাদী হামলার পর সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করেছিল। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই পাকিস্তান এলওসি-তে গুলি চালানো শুরু করে।
শুধু তাই নয়, জানা গিয়েছে,পাক অধিকৃত কাশ্মীরের দক্ষিণ পীরপঞ্জলে এই রকম ৩২টি লঞ্চপ্যাড চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও উত্তর পীরপঞ্জলে মিলেছে ১০টি জঙ্গি ঘাঁটির খবর। এই লঞ্চপ্যাডগুলিতে রয়েছে ১০০ থেকে ১৩০ জন জঙ্গি। দক্ষিণ পীরপঞ্জলে রয়েছে অন্তত ১০০ জন জঙ্গি। ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য উত্তর পীরপঞ্জলে অপেক্ষা করে রয়েছে ৩২ জন জঙ্গি।
সেনা সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরেরে এই লঞ্চ প্যাডগুলি থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য অপেক্ষা করে আছে কয়েক শো পাক জঙ্গি (Pakistan terrorist)। জানা গিয়েছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের যে লঞ্চপ্যাডগুলিতে জঙ্গিরা অপেক্ষা করছে সেই জায়গাগুলি হল- দুধানিয়াল, চেলাবন্দি, ম্যাচা ফ্যাক্টরি, গড়ি দুপাট্টা, বাশ, আলিয়াবাদ আর দক্ষিণ পিরপঞ্জলের মধ্যে যে সব জায়গায় জঙ্গি-ঘাঁটি রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- রাওয়ালকোট, ডুঙ্গি, তাতাপানি, হাজিরা, কোটলি, সেনসা, পালানি, নিকিয়াল, পলক-মিরপুর, তাগোশ।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।