সুকন্যা মণ্ডলের নামে যে ১৬ কোটি টাকা রাখা ছিল, সেই বিষয়টির রহস্য এবার ফাঁস হয়ে গেল দিল্লিতে ইডির দফতরে। তারই মধ্যে পৌঁছেছেন এককালীন ‘রাঁধুনি’ কাম ‘ফটোগ্রাফার’ বিজয় রজক।
এককালে কাজ করতেন অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির পরিচারক হিসেবে। কেষ্টর বাড়ির হেঁশেল সামলানোর দায়িত্ব ছিল যাঁর কাঁধে, তাঁর ব্যাঙ্ক আ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার হিসেব পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। মাঝে মাঝে বিভিন্ন সভায় তাঁকে পেশাদারি ক্যামেরায় কেষ্ট মণ্ডলের ছবিও তুলতে দেখা যেত। পরবর্তীকালে অনুব্রতর বাড়ির চাকরি ছেড়ে তিনি অশিক্ষক কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন লাভপুর কলেজে। বিপুল সম্পত্তির পাশাপাশি সমবায় ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল বিজয় রজকের অ্যাকাউন্ট থেকে। সামান্য পরিচারকের কাজ করে কীভাবে ‘ধনকুবের’ হয়ে উঠলেন বিজয় রজক, এই তত্ত্বই নাড়া দিয়েছিল কেন্দ্রীয় কর্তাদের।
শুক্রবার ইডির তলবের নির্দেশ মেনে দিল্লিতে হাজিরা দিয়েছেন বিজয় রজক। কিন্তু, তিনি দিল্লিতে গিয়ে পৌঁছনোর দিনেই আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে গিয়েছে। কিছুদিন আগেই অনুব্রত মণ্ডলের ১১ দিনের ইডি হেফাজতের পর ৬ দিনের হেফাজতে আটকা পড়েছেন তাঁর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি। ইডি জানতে পেরেছে যে, গরু পাচার কাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডলের যে বড় বড় লাভ হত, সেগুলির বিষয়ে সমস্তকিছুই জানতেন মণীশ কোঠারি। তিনিই অনুব্রতকে বুদ্ধি দিতেন এই বিপুল অঙ্কের টাকা কোন কোন খাতে লগ্নি করলে কালো টাকা সাদা করা যাবে। এই ঘটনার বিষয়ে যখন অনুব্রতকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি জবাব দিয়েছিলেন যে, মণীশ কোঠারিই তাঁকে এইসব বিষয়ে বুদ্ধি দিতেন। কিন্তু, গত ২ দিন ধরে যখন অনুব্রতর সামনে মণীশ কোঠারিকে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তখন তিনি পালটা তীর ঘুরিয়েছেন কেষ্ট মণ্ডলের দিকেই, তিনি বলেছেন, কোন কোন অ্যাকাউন্টে, বা কোন খাতে কত টাকা রাখতে হবে, সেসব নির্দেশ অনুব্রতই তাঁকে দিতেন, তিনি শুধু আদেশ পালন করতেন মাত্র।
ইডি কর্তারা জানতে পেরেছিলেন, শুধুমাত্র অনুব্রত মণ্ডল বা সুকন্যা মণ্ডল নন, দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লগ্নি বা লেনদেনের বিষয়টিও দেখাশোনা করতেন মণীশ কোঠারি নিজেই। তবে, এখানেই চমকের শেষ নয়, জেরাপর্বে চাপের মুখে পড়ে মণীশ ফাঁস করে দিয়েছেন যে, সুকন্যা মণ্ডলের নামে ১৬ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ছিল, সেই বিপুল অর্থ এসেছে গরু পাচারের টাকা থেকেই।
মণীশ কোঠারি আর বিজয় রজকের পর এই কাণ্ডে তলব করা হয়েছে সুকন্য়ার গাড়ির চালক তুফান মিদ্যা, কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ কৃপাময় ঘোষ সহ মোট ১২ জনকে। এঁদের প্রায় প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই বিশাল অঙ্কের টাকার হদিশ পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য দিল্লিতে তলব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-
কোমরের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন? জেনে নিন কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা, এগুলির ব্যবহারে নিমেষেই হতে পারে ব্যথার উপশম
কাপড়ের মধ্যে লুকোনো গাঁজার বান্ডিল, আন্দামান থেকে পাচারকারীর খোঁজ মিলল সোজা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ায়
১ দিনে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকল প্রায় ১ কোটি টাকা, গোয়ার বিলাসবহুল হোটেল আর ত্রিপুরার চা বাগান নিয়ে কী বললেন কুন্তল ঘোষ?