প্রশ্ন করার আগে তিনি কেঁদেকেটে নিস্তার পেতে চান, এমনকি নিজের অপারগতার কথা অকপটে স্বীকারও করে নেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। তাতেই বিপদে পড়ে যান দুঁদে অফিসাররা।
প্রথমেই তাঁকে কলকাতা থেকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার আগে তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় কিছুটা সমস্যা পোহাতে হয় কেন্দ্রীয় কর্তাদের। এরপর মঙ্গলবার রাতেই গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে নয়াদিল্লিতে পৌঁছন ইডি আধিকারিকরা। আবার কোনও নতুন ঝামেলা আসার আগে রাতেই তাঁকে পেশ করা হয় ভার্চুয়াল আদালতে, কিন্তু সেখানেও বাধে গোলযোগ। অনুব্রতর আইনজীবী দাবি তোলেন যে, তাঁর মক্কেলকে সশরীরে নিয়ে গিয়ে হাজির করাতে হবে বিচারকের সামনে। মঙ্গলবার প্রায় মধ্যরাতে কেষ্টকে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বিচারকের বাড়িতে। সেখানে ইডি ১৪ দিনের জেল হেফাজত চাইলেও অনুব্রতকে দেখার পর বিচারক মাত্র ৩ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই ৩ দিনের মধ্যেই যাবতীয় প্রয়োজনীয় প্রশ্নপর্ব শেষ করে নিতে হবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। কিন্তু, প্রথম দিন অনুব্রতকে জেরার মুখেই ইডি কর্তাদের পড়তে হল গণ্ডগোলের মধ্যে।
প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরু হওয়ার একেবারে প্রাক পর্যায়েই কেষ্ট মণ্ডল জানিয়ে দেন যে, তিনি কিছুই মনে করতে পারছেন না। যেহেতু এগুলো সব অনেকদিনের পুরনো ঘটনা, তাই তাঁর স্মৃতি থেকে এগুলো প্রায় মুছেই গিয়েছে। এরপর যখন তাঁকে তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল ও দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের বয়ান জানিয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখন অফিসারদের সামনে একেবারে কান্নায় ভেঙে পড়েন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। স্পষ্ট দাবি করেন, ‘আমি কোনও অন্যায় করিনি। আমার কোনও দোষ নেই।’ এই যুক্তি শুনে তাঁকে প্রশ্নকারীদের ধমকও খেতে হয়েছে বলে খবর।
তবে, শুধু কান্নাকাটিতেই শেষ নয়। অনুব্রতকে প্রশ্ন করার শুরুতে আরও বাধার মুখে পড়তে হয়েছে ইডি কর্তাদের। প্রশ্ন শোনার আগেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি একেবারেই হিন্দি জানেন না। ইংরেজি তো দূর অস্ত। ফলত, রাজধানীতে তাঁকে কোন ভাষায় প্রশ্ন করা হবে, সেই নিয়ে শুরুতেই গোয়েন্দাদের কপালে পড়ে চিন্তার ভাঁজ। এরপর জোটে আরও এক সমস্যা। অভিযুক্তকে যে ভয় দেখিয়ে বা জোর করে বয়ানে ‘হ্যাঁ’ বলানো হয়নি, সেটা প্রমাণ করার জন্য সবসময় অভিযুক্তকে দিয়ে নিজের হাতে বয়ান লেখান ইডি কর্তারা। কিন্তু, অনুব্রতর ক্ষেত্রে সেখানেও বাধে গোলমাল। পেন হাতে নিয়ে একেবারে থতমত খেয়ে গিয়ে প্রশ্নকারীদের কাছে অকপটে স্বীকার করে নেন, ‘আমি লিখতে জানি না, স্যার। শুধু সই করতে পারি।’ ফলে, অভিযুক্তকে তাঁর নিজে হাতে বয়ান লেখানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হল ইডিকে। এরপর এক নিরপেক্ষ সাক্ষীকে ডেকে এনে তাঁকে দিয়ে অনুব্রতর বয়ান শুনে শুনে লেখানো হয়। লেখানোর পর অনুব্রতকে সেই বয়ান পড়ে শোনানো হয়। অনুব্রত মণ্ডল সব শুনে বয়ানের নীচে সই করেন।
অনুব্রত-হারা বীরভূমে তৃণমূলের হাল ধরবে কে? কোর কমিটি নিয়ে জোরদার কর্মসূচিতে নামছে শাসক শিবির
কুকুর দেখাশোনার জন্য দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে নিয়মিত টাকা পাচ্ছেন কর্মী, তা সত্ত্বেও খেতে না পেয়ে মরে গেল ১ হাজার কুকুর