অনুব্রতর নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য পুলিশকে। তেমনই নির্দেশ সিবিআই আদালতের। কলকাতায় আসার পর দায়িত্ব নেবে ইডি।
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর জট কাটল অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাত্রার। আসানসোল আদালতের নির্দেশে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতেই হবে রাজ্য পুলিশকে। কলকাতা পর্যন্ত অনুব্রতর নিরাপত্তার দায়িত্ব আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশের। এখানেই শেষ নয় অনুব্রত দিল্লি যাত্রার পুরো ব্লু প্রিন্টও তৈরি করে দিয়েছে আসানসোল সিবিআই আদালত।
অনুব্রত দিল্লি যাত্রার নীল নক্সা
আসানসোলের সিবিআই আদালত জানিয়েছে, আসানসোল জেল থেকে কলকাতা পর্যন্ত অনুব্রতর নিরাপত্তার দায়িত্ব আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটকে নিতে হবে। কলকাতা পর্যন্ত তৃণমূল নেতাকে নিরাপত্তা দেবে রাজ্য পুলিশ। হাইকোর্টের নির্দেশ মত কোনও কেন্দ্রীয় হাসপাতালে তৃণমূলের নেতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। তারপরই রাজ্য পুলিশ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের কাছে গরু পাচারকাণ্ডে ধৃত অনুব্রত মণ্ডলকে তুলে দেবে। তারপর অনুব্রতর নিরাপত্তার দায়িত্ব ইডির। ইডি তৃণমূল নেতাকে বিমানে করেই কলকাতা থেকে দিল্লি নিয়ে যাবে।
অনুব্রতর কলকাতা থেকে দিল্লি যাত্রা
নিয়ম অনুযায়ী ইডি তৃণমূল নেতার নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে সিআরপিএফের নিরাপত্তার ঘেরা টোপেই অনুব্রত কলকাতা থেকে বিমানে দিল্লি যাত্রা করবেন। যেমনটা হয়েছিল গরু পাচারকাণ্ডে অপর ধৃত সেহগাল হোসেনের ক্ষেত্রে।
অনুব্রতর নিরাপত্তা নিয়ে টানাপোড়েনঃ
শনিবারই কলকাতা হাইকোর্ট অনুব্রতর দিল্লি যাত্রার ওপর ছাড়পত্র দিয়েছিল। কিন্তু অনুব্রতর নিরাপত্তার দায়িত্বে কে নেবে? তা নিয়ে ইডি আর রাজ্য পুলিশের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিলেন। ইডি কয়েকটি চিঠি লিখে অনুব্রতকে কলকাতায় পাঠানোর বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিল আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষের কাছে। কারণ সেখানেই রয়েছেন তৃণমূলের নেতা। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন অনুব্রতর নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে নারাজ আসালসোল - দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। ইডি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারে বলেও জানিয়েছিল।
আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষ আদালতের দ্বারস্থ
এই টানাপোড়েনের মধ্যেই আসানসোল জেল আসানসোল সিবিআই আদালতের কাছে লিখিতে আকারে আবাদেন জানায়। অনুব্রতর দিল্লি যাত্রা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশ চায়।
বিচারক রাদেশ চক্রবর্তীর নির্দেশ
জেল কর্তৃপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতেই আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষই অনুব্রতকে কলকাতা নিয়ে যাবে। সেই সময় তাঁকে নিরাপত্তা দেবে আসানসোল পুলিশ। কলকাতায় কেন্দ্রীয় হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট হবে। হাসপাতার ফিট সার্টিফিকেট দেওয়ার পরেই জেল কর্তৃপক্ষ অনুব্রতকে ইডির হাতে তুলে দেবে। তারপর অনুব্রত নিরাপত্তার দায়িত্ব ইডির। তবে জেল কর্তৃপক্ষ ফোন বা ইমেলের মাধ্যমে অনুব্রতর সব তথ্য আসানসোল পুলিশ ও ইডি আধিকারিক পঙ্কড কুমারকে জানাবে। একই সঙ্গে দ্রুত এই নির্দেশ কার্যকর করারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।